ঢাকার আশুলিয়ার রাণীর পর এবার যশোরের মণিরামপুরে খর্বাকৃতির একটি গরুর দেখা মিলেছে। ছয় মাস বয়সী এই এঁড়ে গরুটি উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের তেঁতুলিয়া গ্রামের সরোয়ারের বাড়িতে পোষা একটি গাভি জন্ম দিয়েছে।
সরোয়ারের বাড়ির ছোট শিশুরা আদর করে গরুটির নাম রেখেছে ‘টুনটুনি’। গরুটির মালিক সরোয়ার নাম রেখেছেন ‘ঝন্টু’। তবে ‘টুনটুনি’ নামেই এলাকার সবার কাছে পরিচিত এই গরুটি। সরোয়ারের বাড়িতে টুনটুনিকে দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছে মানুষ।
টুনটুনির উচ্চতা ১৭ ইঞ্চি এবং দৈর্ঘ্য ৩১ ইঞ্চি। ওজনে আনুমানিক ২৫ থেকে ২৬ কেজি হবে। ছয় মাস বয়সী এই গরুটি বিশ্বের সবচেয়ে খর্বাকৃতির গরু বলে ধারণা করছেন অনেকেই। ২০১৫ সালে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে ভারতের কেরালার ‘মানিক্যান’ গরুর উচ্চতা ছিল ২৪ ইঞ্চি এবং ওজন ছিল ৪০ কেজি। পরে আশুলিয়ার ‘রাণী’ নামের গরুটি গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে স্থান পায়। ওই গরুটির উচ্চতা ছিল ২০ ইঞ্চি এবং ওজন ছিল ২৬ কেজি। যে কারণে টুনটুনি নামের এই গরুটি গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে স্থান পেতে পারে বলে অনেকের ধারণা।
মালিক সরোয়ার হোসেন জানান, তার বাড়িতে তিনটি গাভি রয়েছে। এর মধ্যে একটি গাভি খর্বাকৃতির এঁড়ে বাছুরটির জন্ম দেয়। কয়েকদিন আগে পাবনা জেলা থেকে কয়েকজন লোক বাড়িতে আসেন। তারা বাছুরটি কিনতে চান। তাদের কাছে বাছুরটির দাম চান পাঁচ লাখ টাকা। তারা তিন লাখ টাকা দিতে চাইলেও বিক্রি করেননি। গরুটি স্বাভাবিক গরুর মতোই খাওয়া দাওয়া করে। তারপরও উচ্চতা, দৈর্ঘ্য এমনকি ওজনও বৃদ্ধি পায়নি গরুটির।
গাভির বীজ বিক্রয়কারী সাইফুল কবীর জানান, তিনি আমেরিকান ডেইরি লিমিটেড কোম্পানির বীজ বিক্রি করেন। সরোয়ারের তিন গাভির জন্য এই বীজ দেওয়া হলেও এই খর্বাকৃতির এঁড়ে বাছুর জন্ম নেয়।
ঢাকার বাসিন্দা আরাফাত হোসেন বলেন, আমি এর আগে এমন ছোট গরু দেখিনি। বামন মানুষ দেখেছি, তবে বামন গরু এই প্রথম দেখলাম। নানার বাড়িতে বেড়াতে এসে হঠাৎ এমন সৌভাগ্য হবে কল্পনাও করতে পারিনি। তবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা যদি এটা নিয়ে গবেষণা করে তাহলে আমাদের ধারণা এটা বিশ্বের সবচেয়ে ছোট গরু হবে।
এ ব্যাপারে মণিরামপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা.সাময়ান বলেন, এটা আমাদের সরকারি বীজ দেওয়া না। এটা হচ্ছে আমেরিকান ডেইরির একটা বীজ। একটা ইনফরমেশনের ভিত্তিতে আমরা এটা দেখতে যাই। আমরা শুনেছি যে এটা ১০০% শাহিওয়াল জাতের বীজ দেওয়া ছিল এবং বাছুরটির মা গাভিটি দেশী জাতের।
তিনি আরও বলেন, আমরা ধারণা করছি এটা জেনেটিক্যাল কারণে এটা হতে পারে। তবে এটি বিশ্বের সবচেয়ে ছোট গরু কিনা বিষয়টি এখনো স্পষ্ট নয়।