বঙ্গবাজারের কান্না এবার নিউ সুপার মার্কেটে

৪ এপ্রিল থেকে ১৫ এপ্রিল- দিন দশেকের ব্যবধান। এরমধ্যেই আগুনে পুড়ল রাজধানীর কাপড়ের অন্যতম প্রধান দুই মার্কেট। দুই মার্কেটেই আগুন লাগার সময় মোটামুটি একই। বঙ্গবাজারে আগুন লেগেছিল ভোর ৬টা ১০ মিনিটে, আর আজ নিউ সুপার মার্কেটে আগুন লাগে ভোর ৫টা ৪০ মিনিটে।

দুই মার্কেটেই ক্ষতির চিত্রেও মিল রয়েছে। ঈদের আগে বেচাকেনার জন্য আলাদাভাবে প্রস্তুতি নেওয়া ছিল ব্যবসায়ীদের। আগুন কেড়ে নিয়েছে সব।

নিউ সুপার মার্কেট মূলত কাপড়ের মার্কেট। এখানে শাড়ি, লেহেঙ্গা, থ্রি-পিস, শার্ট-প্যান্ট এবং পাঞ্জাবিসহ নানা ধরনের কাপড় ছিল। এছাড়া খেলনা ও আসবাবপত্রসহ নানা ধরনের পণ্য ছিল।

এই মার্কেটের তৃতীয় তলার ব্যবসায়ী আমিনুল ইসলাম বলেন, গতকাল রাত ২টা পর্যন্ত দোকানে ছিলাম। ভোরে খবর শুনি, আগুন লেগেছে। এসে দেখি মার্কেটের তৃতীয় তলায় আগুন জ্বলছে। কথাগুলো বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।

তিনি আরও বলেন, আগুনে আমার দোকানের সবকিছু পুড়ে গেছে। আমার স্বপ্ন শেষ ভাই। আমি এখন কী করব? ঈদ উপক্ষ্যে ঋণ করে ১০ লাখ টাকার মাল এনেছি, সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

নোঙর ফ্যাশন নামে একটি দোকানের মালিক রফিকুল ইসলাম রোকন বলেন, যা কিছু ছিল সব আগুনে শেষ হয়ে যাচ্ছে। চোখের সামনে দেখছি আমার সব সম্পদ আগুনে পুড়ে যাচ্ছে। কিছুই করতে পারছি না। মালামাল বের করতে পারছি না। স্ত্রীর গহনা বিক্রি করে মালামাল উঠিয়েছি। এখন আমি কী জবাব দেব তাকে?

ব্যবসায়ী নূপুর বেগম বলেন, আমাদের তিন দোকান ছিল, এর মধ্যে একটা দোকানের অর্ধেক মাল নামিয়েছি। আর সব পুড়ে গেছে। আমার ভাই কথা বলছে না, পাগলের মতো হয়ে গেছে। আমার ভাই ফকির হয়ে গেছে। লাখ লাখ টাকার মাল সব গেছে। তিন দোকানই শেষ আমাদের।

আবু সাঈদ নামে একজন ব্যবসায়ী বলেন, নিউ সুপার মার্কেটে আমাদের চারটি দোকান ছিল। এই চার দোকানের সব মালামাল আগুনে পুড়ে গেছে। আমরা কী করব, কোথায় যাব, কার কাছে বিচার চাইব?

কিছুদিন আগে এমন অবস্থা হয়েছে বঙ্গবাজারের ব্যবসায়ীদের। আয়ের উৎস দোকানের সব মালামাল পুড়ে যাওয়ার পর সেখানকার ব্যবসায়ীরাও নিঃস্ব হয়েছেন।

এদিকে নিউ সুপার মার্কেটের এই আগুনের জন্য সিটি করপোরেশনকে দায়ী করছেন মার্কেটের মালিক সমিতির সভাপতি মো. শহিদুল্লাহ। তিনি বলেন, সিটি করপোরেশনের লোক রাত ৩টার দিকে ব্রিজ ভাঙার কাজ করছিল। ব্রিজের ওখানে আমাদের কারেন্টের লাইন আছে সেটা তারা খেয়াল করেনি। ওই লাইনের ওপর বুলডোজার চালানোর সময়ই আগুনের সূত্রপাত হয়। তারা কোনো পরিকল্পনা না করে এই ব্রিজ ভাঙার কারণেই আজ এই দশা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

আপনার মতামত প্রকাশ করুন

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ