নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীতে শতাধিক যাত্রী নিয়ে একটি লঞ্চ ডুবে যাওয়ার ঘটনায় এক শিশুসহ ছয়জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে নারায়ণগঞ্জ সদর নৌথানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান জানান, উদ্ধার অভিযান অব্যাহত আছে। নিহত ব্যক্তিদের নাম-পরিচয় এখনো জানা যায়নি।
এর আগে রোববার (২০ মার্চ) বেলা আড়াইটার দিকে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীতে শতাধিক যাত্রী নিয়ে ‘এম এল আফসার উদ্দিন’ লঞ্চটি ডুবে যায়।
নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের কন্ট্রোল রুম সূত্র জানায়, রোববার বেলা আড়াইটার দিকে বন্দর থানার আল আমিন নগর ও সৈয়দপুরের মাঝামাঝি কয়লাঘাট এলাকায় নির্মিতব্য নাসিম ওসমান ব্রিজের কাছে একটি কার্গো জাহাজের ধাক্কায় লঞ্চটি ডুবে যায়।
স্থানীয়রা জানান, ডুবে যাওয়া লঞ্চটি নারায়ণগঞ্জ থেকে মুন্সীগঞ্জ যাচ্ছিল। এতে শতাধিক যাত্রী ছিল। তাদের মধ্যে অনেকে সাঁতরে তীরে উঠেছেন। তবে অনেক যাত্রী নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানান যাত্রী ও স্থানীয়রা।
নারায়ণগঞ্জ লঞ্চ মালিক সমিতির সভাপতি বদিউজ্জামান বলেন, বেলা ২টার দিকে টার্মিনাল থেকে যাত্রীবাহী লঞ্চটি মুন্সীগঞ্জের উদ্দেশে রওনা হয়েছিল। সিটি গ্রুপের মালিকানাধীন রূপসী-৯ কার্গো জাহাজটি যাওয়ার পথে ওই লঞ্চটিকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এতে লঞ্চটি ডুবে যায়।
নারায়ণগঞ্জ সদর নৌথানা পুলিশের ওসি মো. মনিরুজ্জামান বলেন, দুপুর ২টা ৪৪ মিনিটের দিকে আমরা খবর পাই শীতলক্ষ্যা নদীতে কার্গো জাহাজ এমভি রূপসী মুন্সীগঞ্জগামী যাত্রীবাহী লঞ্চটিকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। খবর পাওয়ার পর আমাদের নৌপুলিশের উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে গেছে। পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিসের ৩টি ইউনিটও উদ্ধার অভিযানে যোগ দিয়েছে।
জরুরি যোগাযোগে হটলাইন নম্বর
এদিকে লঞ্চডুবির ঘটনায় জরুরি যোগাযোগ রক্ষার্থে বিআইডব্লিউটিএ প্রধান কার্যালয়ে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। যেকোনো প্রয়োজনে হটলাইন নং -১৬১১৩, টেলিফোন +৮৮২২২৩৩৫২৩০৬ ও মোবাইল নং +৮৮০১৯৫৮৬৫৮২১৩ নম্বরে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
শীতলক্ষ্যা নদীতে লঞ্চডুবির কারণ উদঘাটন করে দায়ীদের শনাক্তে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়।
রোববার মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব আ ন ম বজলুর রশীদকে আহ্বায়ক করে এ কমিটি গঠন করা হয়। বিআইডব্লিউটিএর পরিচালক (নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক) মুহাম্মদ রফিকুল ইসলামকে কমিটির সদস্যসচিব করা হয়েছে।
ছাড়া নৌ-পরিবহন অধিদপ্তরের নটিক্যাল সার্ভেয়ার অ্যান্ড এক্সমিনার ক্যাপ্টেন আবু সাইদ মোহাম্মদ দেলোয়ার রহমানকে কমিটির সদস্য করা হয়েছে।
কমিটি দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কারণ উদঘাটন ও দুর্ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তি বা সংস্থাকে শনাক্ত করতে করবে। তিন কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।