একমাত্র কমিউনিটি ক্লিনিকটি বিলীন হতে পারে যে কোনো মুহূর্তে

কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, দুধকুমার ও তিস্তা নদী তীরবর্তী মানুষ বসতভিটা ও ফসলি জমি নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। এদিকে জিও ব্যাগ দিয়ে ভাঙনরোধের চেষ্টা চলছে। তারপরেও হুমকির মুখে পড়েছে এলাকার একমাত্র সরকারি কমিউনিটি ক্লিনিকটি। যেকোনো মুহূর্তে সেটি নদীতে বিলীন হতে পারে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত এক মাসে জেলার উলিপুর, চিলমারী ও কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ধরলা, দুধকুমার ও ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনে বাড়িঘরসহ, শত শত বিঘা আবাদি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়নের চরভগবতীপুর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, একটি মসজিদ নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এখন হুমকির মুখে পড়ে আছে একমাত্র কমিউনিটি ক্লিনিকটি। ভাঙন আতঙ্কে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে একটি আবাসন প্রকল্পের বাসিন্দাদের।

সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়নের চরভগবতীপুর এলাকার নুর ইসলাম বলেন, গত এক সপ্তাহে আমার দুই বিঘা আবাদি জমি নদীতে চলে গেছে। এখনো বন্যা আসেনি এতেই যে ভাঙনের অবস্থা। পরে যে কি হবে বলা যাচ্ছে না।

চরভগবতীপুর কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি রাশেদুল ইসলাম বলেন, গত কয়েকদিন ধরে ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে অনেক জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। আমাদের কমিউনিটি ক্লিনিকটি ভাঙনের মুখে। গতকাল ক্লিনিকটির স্থাপনা নিলামে তোলা হয়েছিল। সরকারি শিডিউল অনুযায়ী মূল্য না ওঠায় বিক্রি করা সম্ভব হয়নি। আজকে যে অবস্থা দেখতছি যেকোনো মহুর্তে ক্লিনিকটি নদীগর্ভে বিলীন হতে পারে। আমরা ক্লিনিকের ভেতরে সব আসবাব পত্র ও ওষুধ অন্য জায়গায় নিয়েছি। অস্থায়ীভাবে সেখানে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হবে।

সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল গফুর বলেন, গত দুই সপ্তাহে আমার ইউনিয়নের চরভগবতীপুর গ্রামের ৩৬টি বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ইতিমধ্যে একটি মাধ্যমিক স্কুল, একটি মসজিদ নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এখানে একমাত্র কমিউনিটি ক্লিনিক আছে সেটাও হুমকির মুখে আছে। যেকোনো সময় নদীতে বিলীন হতে পারে। একটি আশ্রয়ণ প্রকল্প আছে সেটিও এখান থেকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। আমরা বসতভিটা হারানো পরিবারের তালিকা প্রস্তুত করছি তা উপজেলা প্রশাসন বরাবর জমা দেওয়া হবে।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. নজরুল ইসলাম বলেন, অনেক চেষ্টা করেও ক্লিনিকটি রক্ষা করা গেল না। আবার কবে ওই চরে ক্লিনিকের স্থাপনা হবে জানি না। তবে অস্থায়ীভাবে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হবে।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বাড়ছে। তবে মাত্রা কম। চরাঞ্চলে কিছু ভাঙন রয়েছে। এদিকে যাত্রাপুর ইউনিয়নের চর ভগবতীপুরের ভাঙন প্রতিরোধে জরুরি ভিত্তিতে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধের যথাসাধ্য চেষ্টা করছি আমরা।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

আপনার মতামত প্রকাশ করুন

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ