জমে যাওয়া ঠান্ডায় আফগানিস্তানে প্রাণ গেল ১৬২ জনের

গত এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে চলতি মাসের সবচেয়ে ভয়াবহ শীতের মৌসুমে আফগানিস্তানে ঠান্ডায় ১৬২ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। ঠান্ডায় জমে যাওয়া তাপমাত্রায় ঘর গরম করার জ্বালানি জোগাড়ে অক্ষম হয়ে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন দেশটির নাগরিকরা। ভয়ানক এই পরিস্থিতিতে শীতের কাছে অসহায় আত্মসমর্পণে বাধ্য হচ্ছেন তারা।

বৃহস্পতিবার দেশটির কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আফগানিস্তানে জেঁকে বসা শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রীর মুখপাত্র শফিউল্লাহ রহিমি বলেছেন, গত ১০ জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে ১৬২ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে কেবল গত সপ্তাহেই প্রাণ গেছে ৮৪ জনের।

গত ১৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ এই শীত আফগানিস্তানকে মারাত্মক অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে ফেলেছে। দেশটিতে ইতোমধ্যে তাপমাত্রা মাইনাস ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের (মাইনাস ২৯.২ ডিগ্রি ফারেনহাইট) নিচে নেমে গেছে।

দেশটির ক্ষমতাসীন কট্টরপন্থী গোষ্ঠী তালেবানের এক আদেশের কারণে নারী কর্মী এনজিও কর্মীদের বেশিরভাগই কাজ করতে পারছেন না। তালেবানের আদেশের পর গত কয়েক সপ্তাহে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন দাতব্য ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা তাদের কাজ আংশিক স্থগিত করেছে।

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের পশ্চিমাঞ্চলের তুষারাবৃত এক মাঠে আবর্জনার মাঝে প্লাস্টিক খুঁজছে কয়েকজন শিশু। কাঠ ও কয়লা কেনার সামর্থ্য না থাকায় পরিবারকে সহায়তা করতে আবর্জনার মাঝে প্লাস্টিক খুঁজছে এই শিশুরা।

এর পাশেই ৩০ বছর বয়সী দোকানি আশুর আলী কনক্রিটের একটি বেজমেন্টে পরিবারকে নিয়ে বসবাস করেন; যেখানে তার পাঁচ সন্তান ঠান্ডায় কাঁপছে। তিনি বলেন, ‘এই বছর আবহাওয়া অত্যন্ত ঠান্ডা এবং আমরা নিজেদের জন্য কয়লা কিনতে পারিনি। তার দোকান থেকে যে অল্প পরিমাণ আয় হয়, তা জ্বালানি কেনার জন্য যথেষ্ট নয়।’

‘শিশুরা ঠান্ডার কারণে ঘুমাতে পারে না এবং রাত থেকে সকাল পর্যন্ত কান্নাকাটি করে। তারা সবাই অসুস্থ। এখন পর্যন্ত আমরা কোনও সাহায্য পাইনি এবং বেশিরভাগ সময় খাওয়ার মতো পর্যাপ্ত রুটিও নেই।’

গত সপ্তাহে কাবুল সফরের সময় জাতিসংঘের দাতব্যবিষয়ক প্রধান মার্টিন গ্রিফিথস বলেছিলেন, বৈশ্বিক এই সংস্থা আফগানিস্তানে বেশিরভাগ নারী দাতব্যকর্মীর ওপর তালেবানের আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার চেয়েছে। তালেবানের ওই নিষেধাজ্ঞা অনেক আফগানের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ সময়ে এসেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

আপনার মতামত প্রকাশ করুন

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ