ডলার সংকট : ওষুধের বাজারে নৈরাজ্য পাকিস্তানে

ডলারের মজুত বাঁচাতে পাকিস্তানে ওষুধের কাঁচামাল আমদানির অনুমতি দিতে গড়িমসি করছে সরকার; আর সরকারের এই ইতস্ততঃ মনোভাবের ফলে রীতিমতো নৈরাজ্য শুরু হয়েছে দেশটির ওষুধের বাজারে।

পাকিস্তানের দৈনিক ডেইলি এক্সপ্রেস ও নাওয়ায়ে ওয়াক্তের বরাত দিয়ে বুধবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতের সংবাদমাধ্যম এএনআই।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডায়াবেটিস রোগীর জন্য অত্যাবশ্যকীয় ইনসুলিনসহ অধিকাংশ জীবনরক্ষাকারী ওষুধ প্রায় ‘হারিয়ে গেছে’ পাকিস্তানের অধিকাংশ ফার্মেসি থেকে। কালোবাজারে অবশ্য এখনও সেসব ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে, কিন্তু সেগুলো বিক্রি হচ্ছে তিন থেকে চারগুণ দামে। ফলে অবর্ননীয় ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন দেশটির সাধারণ জনগণ।

পাকিস্তানের ওষুধের দাম ও মান পর্যবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা সরকারি নিয়ন্ত্রণ সংস্থা ড্রাগ রেগুলেটরি অথরিটি অব পাকিস্তানের (ডিআরএপি) কর্মকর্তারা ডেইলি এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন, ওষুধের বাজারে চলমান এই সংকটের জন্য দায়ী মূলত দু’টি কারণ— (১) কম মুনাফার কারণে দেশটি থেকে একের পর এক বিদেশি ওষুধ কোম্পানির ব্যবসা গুটিয়ে নেওয়া এবং (২) ওষুধের কাঁচামাল আমদানি করতে ব্যাংকে এলসি খোলার যেসব আবেদন উদ্যোক্তারা করেছেন, সেসবের অনুমোদন না দেওয়া।

ডিআরএপির এক কর্মকর্তা ডেইলি এক্সপ্রেসকে বলেন, ‘আমাদের (ওষুধের) কাঁচামালের বাজার প্রায় ৯৫ শতাংশ আমদানিনির্ভর। চীন, ভারত, যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিম ইউরোপের কয়েকটি দেশ থেকে ওষুধের কাঁচামাল আমদানি করা হয়।’

‘আমদানিকারকরা অভিযোগ করেছেন— বিদেশ থেকে কাঁচামাল আমদানির অনুমতি চেয়ে বিভিন্ন ব্যাংকে এলসি খোলার আবেদন তারা করেছেন, কিন্তু ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাদের আবেদনে সাড়া দিচ্ছে না।’

পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে ইতোমধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয় বরাবর এই সমস্যা সমাধানে পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে, তবে এখন পর্যন্ত অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে তার কোনো সাড়া আসেনি।

এদিকে, অর্থ মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করে জানা গেছে— কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ডলারের রিজার্ভ এখন প্রায় তলানিতে পৌঁছানোর পর্যায়ে আছে। শিগগির বৈদেশিক ঋণ পাওয়া যাবে— এমন সম্ভাবনাও ক্ষীণ। এ কারণেই এলসির আবেদনগুলো অনুমোদন দিতে সময় নিচ্ছে মন্ত্রণালয়।

তবে এই বিলম্বের পরিণতি ভয়াবহ হতে পারে উল্লেখ করে ডেইলি এক্সপ্রেসকে ডিআরএপির ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘যদি অর্থ মন্ত্রণালয় আরও বিলম্ব করে, সেক্ষেত্রে শিগগিরই দেশে মানবিক বিপর্যয় শুরুর আশঙ্কা রয়েছে। কারণ এখনও কালোবাজারে কিছু ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে, একসময় তা ও পাওয়া যাবে না।’

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

আপনার মতামত প্রকাশ করুন

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ