ফরিদপুরের নগরকান্দায় ডাকাতির ঘটনার পাঁচ মাস পর জড়িত চার ডাকাতকে লুট করা অর্থসহ গ্রেপ্তার করেছে জেলা পুলিশ। মুরগির ট্রাকে ডাকাতি হওয়া পাঁচ লাখ ৮৬ হাজার টাকার মধ্যে এক লাখ সাত হাজার টাকা এবং একটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।
শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানায় পুলিশ।
প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান জানান, ডাকাতি করে নেওয়া মোবাইলের লোকেশন ট্র্যাকিং করে ঘটনার পাঁচ মাস পর ফরিদপুর, গাজীপুর ও ঢাকার আশুলিয়া এলাকা থেকে ওই ডাকাত দলের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন, মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার যদুয়ার গ্রমের আব্দুস সালাম বেপারী (৪২), একই গ্রামের মো. সেলিম সরদার (৩০), মো. রুবেল আকন (৪০) ও পাভেল খান (৩২)।
পুলিশ জানায়, গত ২ এপ্রিল দুপুর দেড়টার দিকে ফরিদপুর-বরিশাল মহাসড়কে নগরকান্দার বাসাগাড়ি এলাকায় ডাকাতির এ ঘটনা ঘটে। মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার বারিখাল গ্রামের বাসিন্দা সুলতান খানের ছেলে মুরগি ব্যবসায়ী সোহেল খান ঝিনাইদহ থেকে মুরগি কিনে আনার জন্য তার সহযোগীদের টাকা দিয়ে পাঠান।
ট্রাকটি গত ২ এপ্রিল দুপুর সোয়া ১টার দিকে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের ফরিদপুরের নগরকান্দার বাসাগাড়ির এলাকায় এলে দুটি মোটরসাইকেলে করে ডাকাত দলের পাঁচ সদস্য তাদের গতি রোধ করে। পরে তারা ট্রাকের চালক ও দুই সহযোগীকে গাড়ি থেকে নামিয়ে মহাসড়কের পাশে নিয়ে গিয়ে তাদের কিল ঘুষি মেরে মুরগি কেনার জন্য রাখা নগদ ৫ লাখ ৮৬ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল ডাকাতি করে নিয়ে চলে যায়।
এ ঘটনায় ট্রাকচালক মো. নুরু খাঁ বাদী হয়ে ২ এপ্রিল অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে নগরকান্দা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
প্রেস ব্রিফিং-এ পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান বলেন, মহাসড়কে এ ডাকাতির ঘটনার পর তদন্তে নেমে আমরা কোনো কূল-কিনারা পাচ্ছিলাম না। এদিকে দিনে দুপুরে এমন ঘটনা ঘটাও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির জন্য ভালো বার্তা ছিল না। মোটরসাইকেল নিয়ে ডাকাতি করায় আমরা প্রথমে ভেবেছিলাম ডাকাত দলের সদস্যরা আশেপাশের এলাকার লোক। পরে ডাকাতি করে নেওয়া মোবাইলের সূত্র ধরে গত ২১ সেপ্টেম্বর মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার যদুয়ার গ্রামে অভিযান চালিয়ে সালাম বেপারীর স্ত্রীর কাছ থেকে ডাকাতি হওয়া মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করা হয়। পরে সালাম বেপারীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী গতকাল ২২ সেপ্টেম্বর দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে যদুয়ার গ্রাম থেকে সোহেল সরদার, তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে গাজীপুরের চৌরাস্তা এলাকা থেকে রুবেল আকন এবং ঢাকার আশুলিয়া হতে পাভেল খানকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ সুপার জানান, জিজ্ঞাসাবাদে তারা সবাই ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে এবং পলাতক অপর ডাকাতের তথ্য প্রদার করে। পলাতক ডাকাতকে ধরতে এবং অবশিষ্ট টাকা উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত আছে ।
প্রেস ব্রিফিংকালে অন্যদের মধ্যে ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) ইমদাদ হুসাইন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) শৈলেন চাকমা, কোতোয়ালি থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল জলিল, নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিরাজ হোসেন, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নগরকান্দা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আলমগীর হোসেন মোল্লা উপস্থিত ছিলেন।
তদন্তকারী কর্মকর্তা নগরকান্দা থানা পু্লিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আলমগীর হোসেন মোল্লা জানান, গ্রেপ্তার হওয়া ডাকাত দলের ওই চার সদস্যকে শনিবার বিকেলে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।