আমের ভরা মৌসুম কি শুরু হয়েছে? জ্যৈষ্ঠ মাসও অর্ধেকে পড়েছে। হিসাব মতে বাজারে নানা জাতের পরিপক্ক আমে ভরপুর থাকার কথা। কিন্তু এ সময়েও বাজারে আম সরবরাহ নিয়ে সন্তুষ্ট নয় বিক্রেতা কিংবা ক্রেতা কেউই। তবে এই অসন্তুষ্টির মধ্যে আমের বাজার বেশি সুবাস ছড়াচ্ছে সবচেয়ে বেশি বাণিজ্যিক চাষ হওয়া ‘হিমসাগর’। আসতে শুরু করেছে ল্যাংড়া ও আম্রপালি।
বিক্রেতাদের দাবি, এবারে আমের ফলন তুলনামূলক কম। বিদেশি ফলে শুল্ক আরোপের কারণে দাম বেড়ে যাওয়ায় মানুষ দেশীয় ফলে ঝুঁকছে। ফলে সরবরাহের তুলনায় চাহিদা বেড়েছে, তাই দামও বেশি বলছেন বিক্রেতারা।
অন্যদিকে লিচুর বাজারও জমে উঠেছে। সরবরাহ ও দামে তুলনামূলক ‘সন্তুষ্টি’ দেখা গেছে বিক্রেতা-ক্রেতাদের মধ্যে। তবে সংখ্যায় কম দেওয়া নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে রয়েছে অসন্তোষ।
শনিবার (২৮ মে) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার স্থায়ী ফলের দোকান ও রাস্তার মোড়ে মোড়ে আম, জাম, লিচু ও জামরুলের বিক্রির এমন চিত্র দেখা গেছে।
বাজারে হিমসাগর কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ১০০-১৩০ টাকায়, আর ল্যাংড়া আকার ভেদে ১২০-১৪০ এবং আম্রপালি ১৪০-১৫০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। অন্যদিকে কাঁচা মিঠাই আম বিক্রি হচ্ছে ৯০-১০০ টাকায়। আর জাম কেজি প্রতি ১০০-১২০ টাকা, জামরুল কেজি ৫০-১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এ বিষয়ে বাড্ডা বাজারের ফল বিক্রেতা মো. মাসুম বলেন, শুনেছি রাজশাহীর আম আজ থেকে বাজারে পুরোদমে আসবে। বাজারের সরবরাহকরা অধিকাংশ আমই চুয়াডাঙ্গা ও সাতক্ষীরার। এখন পর্যন্ত হিমসাগর বেশি বিক্রি হচ্ছে। ল্যাংড়া আসতে শুরু করেছে। গাড়িভাড়া ও অন্যান্য খরচ বিবেচনা করলে আমাদেরই ১০০ টাকার ওপরে পড়ে যায়। ফলে ১২০ টাকার নিচে বিক্রি করা যাচ্ছে না।
তিনি বলেন, লিচুর সরবরাহ ভালো। ভালো মানের দিনাজপুরের একশ বোম্বাই লিচু বিক্রি হচ্ছে ৩২০-৩৫০ টাকায়। এর চেয়ে কম দামেও লিচু পাবেন। একই দামে মিলবে দেলোয়ারি জাতের লিচু।
লিচু বিক্রেতা ইউনুস জানালেন, বাজারে সাধারণত তিন ধরনের লিচু পাবেন। যার মধ্যে বেশিরভাগই বোম্বাই লিচু। তবে হাইব্রিড জাতের বেদানা ও চায়না জাতের লিচুও পাওয়া যায়। যা এক হাজার থেকে ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে মুধবাগ বাজারে আসা ক্রেতা শাহ-আলম বলেন, এখন পর্যন্ত লিচু বেশি কেনা হয়েছে। আমের মান ও দামের কারণে কম কিনেছি। বাজার ভর্তি আমের চিত্র দেখতে পাচ্ছি না। দামও কমছে না। আবার সরকারের শুল্ক আরোপের কারণে আপেল, মাল্টা ও আঙুর বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে।
বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করে রিজার্ভের ওপর থেকে চাপ কমাতে গত ২৩ মে ফুল, ফল, প্রসাধনী ও আসবাবপণ্য আমদানিতে ২০ শতাংশ পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক (আরডি) আরোপ করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনিবআর)। আপেল, আঙুর, লেবুজাতীয় ফল, কলা, ডুমুর, আনারস, পেয়ারা, আম, অ্যাভোকাডো, তরমুজ, নানা জাতের বাদাম আমদানিতেও ২০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করা হয়।