তথ্যমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি দেখতে পাচ্ছে বিদেশিদের ধারে ধারে ধর্ণা দিয়ে ও হাত-পা মালিশ করে কোনো লাভ হয়নি। যারা ভরসা করেছিল তারাও দেখতে পাচ্ছে বিএনপির ওপর কোনো ভরসা নেই। এই পরিস্থিতিতে বিএনপি এখন হতাশাগ্রস্ত হয়ে কোলা ব্যাঙের মতো আওয়াজ তুলছে মাত্র।
রোববার (২৩ এপ্রিল) বিকেলে চট্টগ্রাম নগরে দেওয়ানজী পুকুর লেনের বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় ও সমসাময়িক বিষয়ে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন তিনি।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল সাহেবদের বড় একটা গলা আছে, আর কিছু নেই। ব্যাঙ প্রাণী ছোট, কিন্তু আওয়াজটা খুব বড়। যখন বর্ষাকালে চারিদিকে পানিতে ডুবে যায় তখন ব্যাঙ প্রচণ্ড আওয়াজ করে। আসলে বিএনপির অবস্থাও হয়েছে কোলা ব্যাঙের মতো।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, দুঃখজনক হলেও সত্য শেখ হাসিনার হাত ধরেই মিডিয়ার ব্যাপ্তি ঘটলেও আমরা সবসময় দেখতে পাই গণমাধ্যমে আজকে যে দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি সেটি সঠিকভাবে প্রকাশিত হয় না। কোনো খারাপ সংবাদ হলে অনেক ক্ষেত্রে সেটি অনেক গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশিত হয়। কেউ কেউ মনে করেন ‘গুড নিউজ ইজ নো নিউজ, বেড নিউজ ইজ গুড নিউজ’ এটি সমীচীন নয় বলে আমি মনে করি।
তিনি বলেন, মির্জা ফখরুলের বক্তব্য মিডিয়ার ওপর আক্রমণ। আমি মনে করি মিডিয়ার ওপর আক্রমণ করা সমীচীন নয়। মির্জা ফখরুল প্রচণ্ড হতাশা থেকে এই কথাগুলো বলেছেন। আজকে বাংলাদেশে যেভাবে স্বস্তির ঈদযাত্রা হয়েছে, মানুষ যেভাবে স্বস্তিতে ঈদ উদযাপন করেছে বিশ্বমন্দা পরিস্থিতির মধ্যে এটি সত্যিই উদাহরণ। একটু অস্বস্তি ছিল গরমের কারণে। এই গরমের কারণে বিএনপি নেতাদের মাথাখারাপ হয়েছে কি-না আমি জানি না।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশে গণমাধ্যমের গাণিতিক বৃদ্ধি ঘটেছে শেখ হাসিনার হাত ধরে। ২০০৯ সালে সরকার গঠনের সময় বাংলাদেশে সাড়ে চারশ দৈনিক পত্রিকা ছিল, এখন ১ হাজার ২৬০টির বেশি দৈনিক পত্রিকা প্রকাশিত হয়। ৯৬ সালে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পাবার পর প্রাইভেট টেলিভিশনের যাত্রাটাও শেখ হাসিনার হাত ধরেই হয়েছে। ২০০৯ সালে টেলিভিশন চ্যানেল ছিল ১০টি। এখন ৪৭টির লাইসেন্স দেয়া হয়েছে। তার মধ্যে ৩৬টি সম্প্রচারে আছে। লাইসেন্সপ্রাপ্ত অন্যান্যরা খুব সহসা সম্প্রচারে আসবে। এতগুলো টেলিভিশন চ্যানেল সেগুলোতে জার্নালিজম থেকে পাস করে বের হওয়া আমাদের ছেলেমেয়েদের চাকরির একটা ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রকৃতপক্ষে আজকে সারা পৃথিবী প্রশংসা করছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বের। করোনা মহামারি মোকাবিলা করার ক্ষেত্রেও নিক্কি ইনস্টিটিউট এবং ব্লুমবার্গের যৌথ জরিপ বলছে, বাংলাদেশের অবস্থান পৃথিবীতে পঞ্চম এবং উপ-মহাদেশে প্রথম। করোনা মহামারির মধ্যে ২০২১ সালে আমাদের মাথাপিছু আয় ভারতকে ছাড়িয়েছে। সেটি নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানে প্রশংসা হয়েছে। এ নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের গণমাধ্যমে তাদের রাজনীতিবিদ ও ক্ষমতাসীনদের নিয়ে সমালোচনা হয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশে প্রশংসার ফুলঝুড়ি বয়ে যায়নি, এটিই বাস্তবতা।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সারা পৃথিবীতে বিএনপির পেইড এজেন্ট আছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে তারা সারা পৃথিবী থেকে অপপ্রচার চালাচ্ছে। তারা যে বিভিন্ন জনের কাছে এ কাজের জন্য টাকা পাঠান সেই অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফাঁস হয়েছে। কাকে কত টাকা দেওয়ার কথা ছিল, টাকা না দেওয়ায় সে রাগ করেছে। এগুলোতেও যখন কাজ হচ্ছে না তাই মিডিয়ার ওপর চড়াও হয়েছে বিএনপি। মিডিয়া চাইলেও সরকারের বিরুদ্ধে অনেকক্ষেত্রে খারাপ সংবাদ পাচ্ছে না বলে পরিবেশিত হচ্ছে না।
মতবিনিময়কালে শিক্ষা উপমন্ত্রী মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, চট্টগ্রাম মহানগর সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা সভাপতি এম এ সালাম এবং দক্ষিণ জেলা সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।