ওজন কমানো কঠিন কাজ। যারা ফুল টাইম অফিস করছেন, তাদের জন্য এটি আরও বেশি কঠিন। দিনের পুরোটা সময় অফিস করতে হলে শরীরচর্চা ও স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ধরে রাখা কষ্টকর। ফাস্টফুড, জাঙ্ক ফুড সহজলভ্য এবং দ্রুতই আপনার ক্ষুধা নিবারণ করে। যে কারণে এদিকে ঝুঁকে পড়াটাই স্বাভাবিক। ফলে আপনার স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন কঠিন হয়ে পড়ে। অন্য কোনো কাজ না থাকলেই কেবল ওজন কমানো যাবে, এই ধারণা ভুল।
আপনার জীবনযাপনে কিছু সহজ এবং স্মার্ট পরিবর্তন এনে নিজেকে একজন স্বাস্থ্যবান ব্যক্তি করে তুলতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনার ফুল টাইম চাকরি কোনো প্রতিবন্ধকতা নয়। সারাদিন অফিসে কাটানোর পরও ওজন কমানো সম্ভব। কীভাবে? চলুন জেনে নেওয়া যাক-
খাবারের তালিকা নির্ধারণ করুন
পুষ্টি বিশেষজ্ঞদের ডায়েট চার্টগুলো কাজ করার মূল কারণগুলোর মধ্যে একটি হলো, তারা আপনার খাবারের পরিকল্পনা আগে থেকে ঠিক করে দেয়। প্রধান খাবার ও হালকা নাস্তায় কী থাকবে তা আগে থেকে ঠিক করা থাকলে অস্বাস্থ্যকর নাস্তা ও ফাস্ট ফুড এড়িয়ে চলা সম্ভব হয়। আপনার প্রিয় ফাস্ট ফুড খাওয়ার জন্য সপ্তাহে একটি চিট ডে নির্ধারণ করতে পারেন। অর্থ সাশ্রয়, সময় বাঁচানো এবং স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া- সবদিকেই আপনার নজর রাখতে হবে।
অস্বাস্থ্যকর নাস্তা নয়
আপনি যদি মনে করেন যে ব্যাগে থাকা চিপসের প্যাকেটটি পরবর্তী আধা ঘণ্টা কাজ করার জন্য আপনাকে শক্তি দেবে, তাহলে ভুল করছেন। এটি অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস। তাই এ ধরনের অভ্যাস ভাঙতে হবে। আপনি যদি অফিসে থাকাকালীন একটু পরপর নাস্তা খেতে থাকেন তবে ওজন কমানো কঠিন হতে পারে। চকোলেট ও ক্যান্ডিতে পূর্ণ ড্রয়ারটি আপনার কাছে আকর্ষণীয় হতে পারে, তবে এটি আপনার কোমরের দৈর্ঘ্য বাড়িয়ে দেবে। দিনের বেলা নাস্তা হিসেবে বাদাম, ফল, দইয়ের মতো স্বাস্থ্যকর নাস্তা বেছে নিতে পারেন।
অতিরিক্ত ক্যালোরি নয়
অনেকেই আছেন যারা কফি ছাড়া কাজে মনোযোগী হতে পারেন না। আপনিও যদি তাদের দলে হন তবে আপনার জন্য ওজন কমানো কঠিন হয়ে যেতে পারে। অতিরিক্ত কফি বা চান পান করলে তা অতিরিক্ত ক্যালোরি যোগ করতে পারে। এই পানীয়গুলোর সবচেয়ে খারাপ দিক হলো এতে চিনি যোগ করা। এককাপ মিষ্টি কফিতে প্রায় একশো ক্যালোরি থাকে। আপনি যদি দিনে ৩-৪ কাপ কফি পান করেন তবে তা আপনার ক্যালোরির চাহিদার চেয়ে বেশি হয়ে যাবে। প্রতিদিন কফির পরিমাণ এককাপে সীমাবদ্ধ রাখুন, সেইসঙ্গে চিনি ছাড়া ব্ল্যাক কফি পান করার অভ্যাস করুন। এগুলো আপনার অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি বন্ধ করতে পারে।
দৈনন্দিন কার্যকলাপ বৃদ্ধি করুন
যদি অফিসে যাতায়াত করতে সময় লাগে এবং দিনে আট ঘণ্টা ডেস্কে কাজ করেন, তাহলে ব্যায়ামের জন্য সময় খুঁজে পাওয়া খুব কঠিন হতে পারে। একটি উপায় হলো একটি জিমে যোগদান করা বা সকালে ব্যায়ামের জন্য সময় বের করা। যদি কোনোটাই সম্ভব না হয় তবে আপনার দৈনন্দিন কার্যকলাপ বৃদ্ধি করুন এবং দিনের বেলা যতটা সম্ভব হাঁটার চেষ্টা করুন। অফিসে যাওয়া-আসা করার সময় যতটুকু পথ সম্ভব হাঁটার চেষ্টা করুন এবং লিফটের পরিবর্তে সিঁড়ি ব্যবহার করুন। অফিসের কাজের ফাঁকে বিরতি নিয়ে কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করুন। এসব ছোট ছোট পদক্ষেপ আপনাকে ক্যালোরি পোড়াতে এবং একটি স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখতে সহায়তা করবে।