আজ পবিত্র শবে বরাত। হিজরি বর্ষের শাবান মাসটি মর্যাদার ও ফজিলতপূর্ণ। ১৪ সাবান দিবাগত রাত ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের কাছে সৌভাগ্যের রাত হিসেবে পরিচিত। এই রাতে বান্দাদের জন্য অশেষ রহমতের দরজা খুলে দেন মহান আল্লাহ তাআলা।
ফারসি ‘শব’ শব্দের অর্থ রাত আর ‘বরাত’ শব্দের অর্থ সৌভাগ্য। আরবিতে বলে ‘লাইলাতুল বরাত’, অর্থাৎ সৌভাগ্যের রাত।
নবী কারিম (সা.) ইরশাদ করেছেন, আল্লাহ তাআলা অর্ধশাবানের রাতে মাখলুকাতের দিকে রহমতের দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ছাড়া আর সবাইকে ক্ষমা করে দেন (সহিহ ইবনে হিব্বান: ৫৬৬৫, ইবনে মাজাহ: ১৩৯০, রাজিন: ২০৪৮; সহিহ ইবনে খুজাইমা, পৃষ্ঠা: ১৩৬)।
রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেন: আল্লাহ তাআলা এ রাতে বিদ্বেষ পোষণকারী ও নিরপরাধ মানুষকে হত্যাকারী ছাড়া বাকি সব বান্দাকে ক্ষমা করে দেন (মুসনাদে আহমদ, চতুর্থ খণ্ড, পৃষ্ঠা: ১৭৬)। ‘এ রাতে আল্লাহ তাআলা মুশরিক ও ব্যভিচারিণী ছাড়া সবার চাওয়া পূরণ করে থাকেন (শুআবুল ঈমান, তৃতীয় খণ্ড, পৃষ্ঠা: ৩৮৩)।’
নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘এ রাতে বনি কালবের ভেড়া বকরির পশমের (সংখ্যার পরিমাণের) চেয়ে বেশিসংখ্যক গুণাহগারকে আল্লাহ ক্ষমা করে দেন।’ (তিরমিজি: ৭৩৯)।
শবে বরাতের করণীয় আমল সম্পর্কে নবী কারিম (সা.) বলেছেন, ‘১৪ শাবান দিবাগত রাত যখন আসে, তখন তোমরা এ রাত ইবাদত–বন্দেগিতে কাটাও এবং দিনের বেলায় রোজা রাখো। কেননা, এদিন সূর্যাস্তের পর আল্লাহ তাআলা দুনিয়ার আসমানে নেমে আসেন এবং আহ্বান করেন: কোনো ক্ষমাপ্রার্থী আছ কি? আমি ক্ষমা করব; কোনো রিজিকপ্রার্থী আছ কি? আমি রিজিক দেব; আছ কি কোনো বিপদগ্রস্ত? আমি উদ্ধার করব। এভাবে ভোর পর্যন্ত বিভিন্ন প্রয়োজনের কথা উল্লেখ করে আহ্বান করতে থাকেন (ইবনে মাজাহ: ১৩৮৪)।
মহিমান্বিত এই রাতে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা পরম করুণাময় মহান আল্লাহর অনুগ্রহ লাভের আশায় নফল নামাজ পড়েন, কোরআন তিলাওয়াত করেন এবং জিকিরে মগ্ন থাকেন। অতীতের পাপ–অন্যায়ের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা এবং ভবিষ্যৎ জীবনের কল্যাণ কামনা করে মোনাজাত করেন মুসলমানরা।