ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নতুন যে নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাব দিয়েছিল ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পরিচালনা পর্ষদ ইউরোপীয় কমিশন; জার্মানি, হাঙ্গেরিসহ কয়েকটি দেশের আপত্তিতে তা আটকে গেছে।
সূত্রের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স ও কানাডাভিত্তিক টেলিভিশন সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল নিউজ।
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের সংলগ্ন শহর বুচায় গণহত্যার প্রতিবাদে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নতুন একপ্রস্থ নিষেধাজ্ঞার খসড়া প্রস্তুত করেছিল ইউরোপীয় কমিশন। মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেন সেই খসড়া তুলে ধরেন।
নতুন এই প্রস্তাবনায় রাশিয়ার কয়লা, ৪ টি রুশ ব্যাংকের সঙ্গে লেনদেন ও ইউরোপের বন্দরে রুশ জাহাজ প্রবেশ ও অবস্থানের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির পক্ষে বলা হয়। এর বাইরে নিষেধাজ্ঞার সুপারিশ করা হয় রাশিয়া থেকে কাঠ, সিমেন্ট, সামুদ্রিক খাবার ও স্পিরিট আমদানির ওপরও।
তবে রাশিয়ার জ্বালানি গ্যাস ও তেল নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত রাখা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উরসুলা ভন ডার লেন বলেছিলেন, বুধবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যরাষ্ট্রসমূহের প্রতিনিধিদের বৈঠক হবে। সেই বৈঠকে তোলা হবে এই নতুন প্রস্তাবনা।
কিন্তু বুধবারের বৈঠকে এই প্রস্তাবনা উত্থাপনের পর তা কার্যকরে আপত্তি জানায় জার্মানি, হাঙ্গেরিসহ ইউরোপের কয়েকটি রাষ্ট্র। আপত্তির মূল কারণ ছিল রুশ কয়লা আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা।
ইউরোপে রাশিয়ার কয়লার সবচেয়ে বড় আমদানিকারক দেশ জার্মানি। বৈঠকে নতুন প্রস্তাব উত্থাপনের পর জার্মানির প্রতিনিধি জানতে চান, রাশিয়ার সঙ্গে কয়লা আমদানি বিষয়ক যেসব চুক্তি বর্তমানে ক্রিয়াশীল আছে, সেসবের ওপর এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে কিনা। যদি হয়, সেক্ষেত্রে জার্মানির স্পষ্ট আপত্তি রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, যদি কয়লার বিষয়ে রাশিয়ার সঙ্গে নতুন চুক্তি করার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়, তাহলেও এই নিষেধাজ্ঞা অর্থহীন; কারণ বর্তমানে যেসব চুক্তি আছে, সেগুলো কার্যকর থাকলে ইউরোপে রাশিয়ার কয়লা আসার ক্ষেত্রে কোনো বাধা থাকবে না।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের বৈঠকে উপস্থাপনের আগেই প্রস্তাবনা নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করায় কমিশন প্রেসিডেন্টের সমালোচনাও করেন ইইউ প্রতিনিধিরা।
গ্লোবাল নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেন ইস্যুতে এর আগেও একবার কয়লা আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির প্রস্তাব দিয়েছিল ইউরোপীয় কমিশন এবং সেবারও জার্মানির আপত্তির কারণে তা কার্যকর করা যায়নি।
রাশিয়ার জ্বালানিসম্পদের ওপর ইউরোপ ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। দেশটির মোট জ্বালানি চাহিদার প্রায় ৪০ শতাংশ যোগান আসে রাশিয়া থেকে।