ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধের মধ্যেই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন কঠোর একটি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। আর তা হচ্ছে- রাশিয়াকে রক্ষা করতে তিনি পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে প্রস্তুত। বৈশ্বিক পরাশক্তি এই দেশটির প্রেসিডেন্টের সর্বশেষ এই হুঁশিয়ারি একটি উদ্বেগজনক প্রশ্নকে বেশ গুরুতরভাবে সামনে এনেছে। আর তা হলো- সাবেক এই কেজিবি গুপ্তচর কি ধাপ্পাবাজি করছেন?
তবে হুঁশিয়ারি দেওয়ার সময়ই প্রেসিডেন্ট পুতিন সতর্ক করে দিয়েছিলেন, এটি (তার হুমকি) কোনো ব্লাফ বা কথার কথা নয়। কিন্তু এরপরও পশ্চিমা রাজনীতিবিদ, কূটনীতিক এবং পারমাণবিক অস্ত্র বিশেষজ্ঞরা পুতিনের হুমকির যথার্থতা নিয়ে কার্যত বিভক্ত।
কেউ কেউ বলছেন, ইউক্রেনে নিজের সামরিক পরাজয় এড়াতে, নিজের প্রেসিডেন্ট পদ রক্ষা করতে, পশ্চিমা দেশগুলোকে ভয় দেখাতে বা ইউক্রেনকে আত্মসমর্পণের জন্য আতঙ্কিত করতে এক বা একাধিক ছোট, কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারেন পুতিন।
রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত করার লক্ষ্যে পূর্ব ইউক্রেনের রুশ দখলদারিত্বে থাকা চারটি অঞ্চলে ইতোমধ্যে ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। বলপ্রয়োগ করে দখল করা এসব অঞ্চলে মঙ্গলবার ভোট সম্পন্ন হয়। তবে ভোট শেষ হওয়ার পরপরই দখলকৃত ভূখণ্ডের এই গণভোটে বিজয়ের দাবি করেছেন রাশিয়ার নিযুক্ত কর্মকর্তারা।
ভোট শেষ হওয়ায় রাশিয়ান পার্লামেন্ট কয়েক দিনের মধ্যেই হয়তো এই সংযোজনকে আনুষ্ঠানিক রূপ দিতে পারে। পূর্ব ইউক্রেনের লুহানস্ক, দোনেৎস্ক, খেরসন এবং জাপোরিজিয়া- এই চারটি অঞ্চলকে রাশিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করার পর সেখানে কোনো হামলা হলে সেটা রাশিয়ার ওপর আক্রমণ হিসাবে দেখাতে পারে মস্কো। আর এটি কিয়েভ এবং তার পশ্চিমা মিত্রদের জন্য একটি সতর্কতা।
তবে পুতিনের সর্বশেষ এই হুঁশিয়ারির অর্থ এমনও হতে পারে যে, রাশিয়া এই চারটি ইউক্রেনীয় অঞ্চলকে সংযুক্ত করার পরে চলমান সংঘাত আরও বড় মাত্রা নিতে পারে বলে মনে করছে ক্রেমলিন। রাশিয়ার পার্লামেন্ট আগামী ৪ অক্টোবর এই অঞ্চলগুলোকে রাশিয়ার অংশ হিসাবে ঘোষণা করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আর একবার এটি হয়ে গেলে মস্কোর দৃষ্টিকোণ থেকে, একটি সম্ভাব্য প্রতিরক্ষামূলক হামলার পথ পরিষ্কার হয়ে যাবে যদি এটি (রাশিয়া) মনে করে যে, এই অঞ্চলটি গুরুতর হুমকির মধ্যে রয়েছে। রীতি ভেঙে পারমাণবিক হামলা হলে সেটি অবশ্যই হতাশার কারণ হবে।
তবে পুতিন পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেবেন কি না তা নির্ভর করছে তার ওপরই। মূলত চলমান এই যুদ্ধে শেষ পর্যন্ত পুতিন নিজেকে কতটা কোণঠাসা বোধ করছেন; পরমাণু হামলা হওয়া বা না হওয়াটাও অনেকাংশে এই বিষয়ের ওপর নির্ভর করছে।