বাংলাদেশে এখন প্রায় ১০ হাজার শিল্প ও কল-কারখানা রয়েছে। এর মধ্যে মে মাসের বেতন পরিশোধ করা হয়েছে ৮ হাজার ৪৫৫টি শিল্প ও কল-কারখানায়। অর্থাৎ জুনের ১৯ দিন পার হলেও এখনো বেতন পাননি ১ হাজার ৪৬০টি কল-কারখানার শ্রমিকরা।
পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিটিএমইএ, বেপজা,পাটকল এবং শিল্পাঞ্চল পুলিশ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, সোমবার (১৯ জুন) বিকেল ৪টা পর্যন্ত সময়ে ৯ হাজার ৯১৫টি কল-কারখানার মধ্যে চলতি বছরের মে মাসের বেতন দেওয়া হয়েছে ৮ হাজার ৪৫৫টি কল-কারখানায়। যা শতাংশের হিসেবে ৮৫ দশমিক ২৭ শতাংশ। অর্থাৎ ১ হাজার ৪৬০টি কারখানার শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করা হয়নি। যা শতাংশের হিসেবে ১৪ দশমিক ৭৩ শতাংশ।
তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সদস্যভুক্ত ১ হাজার ৬২৪ কারখানার মধ্যে মে মাসের বেতন হয়েছে ১ হাজার ৪৪৩টি কারখানায়। অর্থাৎ ১৮১টি কারখানায় এখনো মে মাসের বেতন হয়নি।
নিটওয়ার মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সদস্যভুক্ত ৬৯৯টি কারখানার মধ্যে ৫৮০ কারখানার বেতন পরিশোধ করা হয়। ১১৯টি বেতন পরিশোধ করা হয়নি।
বিটিএমইএর ৩৫৯টি কারখানার মধ্যে ৩০১ কারখানার বেতন পরিশোধ করা হয়েছে, বাকি আছে ৫৮টির। বেপজার ৩৯২টির মধ্যে ৩৮৫ কারখানার বেতন পরিশোধ করা হয়েছে, বাকি আছে ৭টির।
পাটকল ৯০টির মধ্যে ৮৪ বেতন পরিশোধ করা হয়েছে, বাকি আছে ৬টির। ৬ হাজার ৭৫১টি কারখানার মধ্যে ৫ হাজার ৬৫৬টির বেতন দেওয়া হয়েছে, আর পরিশোধ করা হয়নি এক হাজার ৯৫টির। মোট ১ হাজার ৪৬০টি কারখানায় বেতন হয়নি। যা শতাংশের হিসেবে ১৪ দশমিক ৭৩ শতাংশ।
সূত্র জানায়, আশুলিয়া এলাকার থাকা ১৭৯২টি কল-কারখানার মধ্যে ৮০ দশমিক ৯৭ শতাংশ কারখানায় বেতন পরিশোধ করা হয়েছে। বাকি রয়েছে ১৯ দশমিক ৩ শতাংশ। গাজীপুর এলাকার মধ্যে ২ হাজার ২৮৭ কারখানার মধ্যে ৮১ দশমিক ৪৬ শতাংশ কারখানার বেতন পরিশোধ করা হয়েছে। অর্থাৎ ১৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ কারখানার বাকি রয়েছে।
চট্টগ্রামের ১৪৮০ কারখানার মধ্যে ৯২ দশমিক ৩০ শতাংশ কারখানার বেতন দেওয়া হয়েছে। নারায়ণগঞ্জের ২২০৭টির মধ্যে ৭৪ দশমিক ৭৬ কারখানায় বেতন পরিশোধ করা হয়েছে। ময়মনসিংহের ২৬৬টির মধ্যে ৯৩ দশমিক ৬১ শতাংশ, রাজশাহী এলাকার ৭৭৬টির মধ্যে ৯৯ দশমিক ৩৯ শতাংশ কারখানায় মে মাসের বেতন পরিশোধ করা হয়েছে। খুলনার ৩৬৭টির মধ্যে ৯৯ দশমিক ৪৬ শতাংশ এবং সিলেটের ৭৪০টি কারখানার সব কয় পরিশোধ করা হয়েছে।
এদিকে ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে জুন মাসের প্রথম ১৫ দিনের বেতন পরিশোধ করেছে ৫২টি কারখানা। অর্থাৎ জুন মাসের ১৫ দিনের বেতন পাননি ৯ হাজার ৮৬৩টি কারখানার শ্রমিকরা।
উল্লেখ্য, জাতীয় ত্রি-পক্ষীয় পরামর্শ পরিষদের (টিসিসি) ৭৫তম এবং আরএমজি টিসিসির ১৫তম সভা অনুষ্ঠিত হয় ৬ জুন। সেখানে শিল্প-কারখানার বেতন-ভাতা পরিশোধ নিয়ে আলোচনা করেন সংশ্লিষ্টরা। সভায় সভাপতিত্ব করেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান। সভা শেষে তিনি ঈদুল আজহার ছুটির আগেই শ্রমিকদের ঈদ বোনাস এবং জুন মাসের ১৫ দিনের বেতন দেওয়ার জন্য মালিকদের প্রতি আহ্বান জানান।