ময়মনসিংহে চলন্ত ট্রাক আটকে ৪৭ লাখ টাকার সুপারি ভর্তি ট্রাক ডাকাতির ঘটনায় ডাকাত দলের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। প্রযুক্তির সহায়তায় নারায়ণগঞ্জ থেকে চার ডাকাতকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদের আদালতে তোলা হলে তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
রোববার (৯ এপ্রিল) দুপুরে পিবিআই ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার মো. রকিবুল আক্তার সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।
পিবিআই জানায়, গত বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ সড়কের ঈশ্বরগঞ্জের হারুয়া এলাকায় ট্রাক ভর্তি ৪৭ লাখ টাকার সুপারি ডাকাতি হয়। নেত্রকোণার দুর্গাপুরের ব্যবসায়ী অনুকুল পাল ভোলা জেলার বোরহান থানা এলাকার ব্যবসায়ী মো. মনিরের কাছ থেকে সুপারি কিনেছিলেন। সেই সুপারি মেসার্স জুলেখা ট্রান্সপোর্টের মাধ্যমে সরবরাহ করতে গিয়ে ডাকাত দলের খপ্পরে পড়ে। ট্রাকচালক বাবুল একা ট্রাকটি চালিয়ে যাওয়ার সময় প্রাইভেকটারে ৬ সদস্যের ডাকাত দল ট্রাকের সামনে ব্যারিকেড সৃষ্টি করে।
ডাকাত দলের সদস্যরা ট্রাকে উঠে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে রশি দিয়ে ট্রাকচালকের হাত-পা বাঁধে এবং গামছা দিয়ে মুখ চোখ বেঁধে ফেলে। ডাকাতরা সম্পূর্ণ ট্রাকের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর ট্রাক ঘুরিয়ে পুনরায় কিশোরগঞ্জের ভৈরব হাজী হাসমত আলী কলেজের কাছে রাস্তায় চালক বাবুলকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ফেলে দিয়ে ট্রাক নিয়ে চলে যায়। এ ঘটনায় মেসার্স জুলেখা ট্রান্সপোর্টের মালিক কামাল হোসেন বাদী হয়ে ওই বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর ঈশ্বরগঞ্জ থানায় মামলা করলে পুলিশ নারায়ণগঞ্জ থেকে ট্রাকটি উদ্ধার করে। কিন্তু থানা পুলিশ ও ডিবি পুলিশ মামলাটির রহস্য উন্মোচন করতে না পারলে চলতি বছরের ৫ মার্চ মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় পিবিআই।
প্রযুক্তির সহায়তায় পিবিআই ডাকাত দলের সদস্য বাগেরহাটের শুভ শেখকে (২৪) গ্রেপ্তার করে। ট্রাকচালকের মোবাইলসহ নারায়ণগঞ্জ থেকে তাকে গ্রেপ্তারের পর চক্রের অপর সদস্য পটুয়াখালীর মো. বাপ্পি (৩০), রিগান খান (২৬), চাঁদপুরের মো. মামুন প্রধানকে (৪০) গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের সবাই নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় থেকে অপরাধমূলক কাজ করতেন। তাদের হেফাজত থেকে ডাকাতিতে অংশ নেওয়া প্রাইভেটকারটি সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এলাকা হতে জব্দ করা হয়। গ্রেপ্তারের পর তাদের ময়মনসিংহ আদালতে তোলা হলে সবাই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
পিবিআই ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার মো. রকিবুল আক্তার বলেন, এটি বেশ চাঞ্চল্যকর ডাকাতির ঘটনা। অজ্ঞাত ডাকাত দল সুপারি ভর্তি ট্রাক ডাকাতি করে নিয়ে যায়। মোট ছয় ডাকাত অংশ নেয়। ডাকাত দলের চারজন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন আদালতে। অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।