ভুয়া এনআইডি কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স ও বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ডর জাল সার্টিফিকেট তৈরি এবং জালিয়াতি চক্রের মূলহোতা গোলাম মোস্তফাসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
র্যাব বলছে, ফেইক আইডির মাধ্যমে চক্রটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন গ্রুপে চটকদার বিজ্ঞাপন পোস্ট করত। দ্রুত সময়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স ও এনআইডি কার্ড করে দেয়ার ক্ষেত্র বিশেষে তারা ৮-১০ হাজার টাকা দাবি করত। এক্ষেত্রে তারা বাইক রাইডার, লাইসেন্স বিহীন বিভিন্ন গাড়ির চালক যারা দ্রুত সময়ের মধ্যে ড্রাইভিং লাইসেন্স/এনআইডি পেতে আগ্রহী অথবা যারা অবৈধভাবে লাইসেন্স/এনআইডি প্রত্যাশী তাদের টার্গেট করে থাকে। এছাড়াও রোহিঙ্গা, জঙ্গি সদস্য, দীর্ঘদিনের পলাতক আসামিরা নিজেদেরকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দেয়ার জন্য ভিন্ন নামে ভুয়া এনআইডি কার্ড, পাসপোর্ট তৈরি করে পালিয়ে বিভিন্ন দেশে গমন করে আত্মগোপনে থাকতো৷
সোমবার রাতে রাজধানীর মালিবাগ, বাসাবো, শাহজাহানপুর ও কোতয়ালী থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে এই প্রতারণা চক্রের মূলহোতা মো. গোলাম মোস্তফা (৬০), মো. জালাল বাশার (৫৪), মো. মুসলিম উদ্দিন (৬৫), মো. মিনারুল ইসলাম (মিন্নি) (২২), এবং মো. তারেক মৃধাদের (২১) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৩।
অভিযানের সময় উদ্ধার করা হয় ২টি কম্পিউটার, ২ হাজার ৪৬০টি বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের জাল প্রাপ্তি স্বীকার রশিদ, ২৬টি ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র, ১টি ল্যাপটপ, ১টি ডিজিটাল ক্যামেরা, ১৮টি ভুয়া ড্রাইভিং লাইসেন্স, ৮০টি সাদা রঙের প্লাস্টিকের ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র ও ড্রাইভিং লাইসেন্স তৈরির ব্লাঙ্ক কার্ড, ৫০টি স্বচ্ছ কার্ড হোল্ডার, ২ রিল সিকিউরিটি লেমিনেটিং পেপার যা দিয়ে জাল ড্রাইভিং লাইসেন্স ও জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করা যায়, ১টি কার্ড প্রিন্টার, ৪টি সফ্টওয়্যারের সিডি, ৪টি পেনড্রাইভ, ৫টি মোবাইল ফোন এবং নগদ ২ হাজার ৮০০টাকা।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব সদরদপ্তরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় , তারা ৫-৭ জনের একটি চক্র গত ০৮-১০ বছর ধরে ভুয়া এনআইডি কার্ড, ভুয়া ড্রাইভিং লাইসেন্স, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জাল সার্টিফিকেট ও অন্যান্য জাল নথিপত্র তৈরি করে আসছে।
খন্দকার আল মঈন বলেন, গ্রেপ্তার মোস্তফা এই চক্রের মূলহোতা ও বাকীরা তার সহযোগী। এই চক্রের সদস্যরা বিভিন্ন নির্বাচন অফিস ও বিআরটিএ অফিসের সামনে অবস্থান করে গ্রাহকদের টার্গেট করত। পরবর্তীতে তাদেরকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ড্রাইভিং লাইসেন্স ও জাতীয় পরিচয়পত্র প্রাপ্তির নিশ্চয়তা দিয়ে প্রতারণা করত। বিশ্বাস যোগ্যতা অর্জনে তারা হুবহু জাল প্রাপ্তি স্বীকার পত্র ও মানি রিসিটটি বিআরটিএ ও বিভিন্ন ব্যাংকসহ ভুয়া সীল ও স্বাক্ষর ব্যবহার করে গ্রাহককে দিতো।