ভারতের বহুল আলোচিত সেই ধর্ষণকাণ্ডে ৯ বাংলাদেশির কারাদণ্ড

ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ কর্ণাটকের রাজধানী বেঙ্গালুরুর বিশেষ একটি আদালত সেখানে বাংলাদেশি এক তরুণীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে অন্তত ৯ বাংলাদেশিকে পাঁচ বছর থেকে যাবজ্জীবন পর্যন্ত কারাদণ্ড দিয়েছেন। গত বছরের মে মাসে বহুল আলোচিত যৌন-নিপীড়নের এই ঘটনার একটি ভিডিও দুই দেশে ভাইরাল হয়ে যাওয়ার পর ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়।

শুক্রবার বেঙ্গালুরুর বিশেষ আদালত-৫৪ অভিযুক্তদের দোষী সাব্যস্ত করে রায় ঘোষণা করেছেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বলছে, এই মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত বাংলাদেশিরা হলেন— চাঁদ মিয়া, মোহাম্মদ রিফাতুল ইসলাম হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয়, মোহাম্মদ আলামিন হোসেন, রকিবুল ইসলাম, মোহাম্মদ বাবু শেখ, মোহাম্মদ ডালিম এবং আজিম হোসেন।

এছাড়া তানিয়া খান নামের এক নারীকে ২০ বছর এবং মোহাম্মদ জামাল নামের এক বাংলাদেশি ৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অন্য দু’জনকে ফরেনার্স অ্যাক্টের আওতায় দোষী সাব্যস্ত করে ৯ মাসের কারাদণ্ড এবং এক ভারতীয়কে খালাস দিয়েছেন আদালত।

গত বছরের ২১ মে বেঙ্গালুরুতে বাংলাদেশি তরুণীকে যৌননির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যাওয়ার পর এই ঘটনা উভয় দেশে ব্যাপক আলোড়ন তৈরি করে। ভিডিওতে দেখা যায়, ২০-২২ বছরের এক তরুণীকে বিবস্ত্র করে ৩ থেকে ৪ জন যুবক শারীরিক ও বিকৃতভাবে যৌন নির্যাতন করছে।

এ নিয়ে বাংলাদেশেও তদন্তে নামে পুলিশ। পরে পুলিশ ভিডিওটির একজনের সঙ্গে বাংলাদেশি এক তরুণের ছবির মিল খুঁজে পায়। পুলিশ নিশ্চিত হয়— নির্যাতনকারী ওই যুবকের নাম রিফাতুল ইসলাম হৃদয়। রাজধানীর মগবাজার এলাকার বাসিন্দা। হৃদয়ের পরিচয় তার মা ও মামার কাছ থেকে শনাক্ত করা হয়। এলাকায় সে টিকটক হৃদয় নামে পরিচিত। নির্যাতনের শিকার তরুণীর বাবা ঢাকার হাতিরঝিল থানায় মানব পাচার ও পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা করেন।

পরে বেঙ্গালুরু পুলিশের গ্রেফতার অভিযানের সময় পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে অন্তত তিনজন গুলিবিদ্ধ হন। বেঙ্গালুরু পুলিশ সেসময় জানায়, ধর্ষণের শিকার তরুণী বাংলাদেশের একটি মানবপাচার চক্রের মাধ্যমে ভারতে পাচার হয়েছেন। ওই তরুণীকে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করে পাচারকারীরা। টাকা নিয়ে বিবাদের কারণে ওই তরুণীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ এবং শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে বলে তদন্তে উঠে আসে।

এই চক্রটি বিভিন্ন ধরনের প্রলোভন দেখিয়ে বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, পশ্চিমবঙ্গ, তেলেঙ্গানা এবং কর্ণাটকে নারী ও তরুণীদের পাচার করে।

গত বছর ওই ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে যাওয়ার পর দেশটির কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজু এক টুইটে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশকে সহায়তার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানান। তদন্তে পুলিশ জানতে পায় গণধর্ষণের ওই ঘটনা বেঙ্গালুরু শহরের কানাকা নগরে ঘটেছে। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ১২ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে, যাদের ১১ জনই বাংলাদেশ থেকে ভারতে যাওয়া অবৈধ অভিবাসী এবং একজন স্থানীয় বাসিন্দা।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

আপনার মতামত প্রকাশ করুন

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ