বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল এসএম শফিউদ্দিন আহমেদের আমন্ত্রণে সোমবার বাংলাদেশে এসেছেন কাতার সশস্ত্র বাহিনীর চিফ অব স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল (পাইলট) সালেম হামাদ আল-আকীল আল-নাবেত।
মঙ্গলবার (৭ জুন) সেনাবাহিনীর সদর দপ্তরে বাংলাদেশের সেনাপ্রধানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন এবং তাকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য কৃতজ্ঞতা জানান।
একান্ত সাক্ষাতে তারা পারস্পরিক কুশলাদি বিনিময় ছাড়াও দুই দেশের সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে বিদ্যমান সুসম্পর্ক ও ভবিষ্যৎ অগ্রযাত্রায় সহযোগিতার বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন। এরপর সেনাসদরের হেলমেট কনফারেন্স রুমে প্রতিনিধি দলের জন্য বিশেষ ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর রণপ্রস্তুতি, উন্নত প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা, বিশ্ব শান্তিতে ভূমিকা এবং সামগ্রিক প্রশাসনিক কাঠামো সম্পর্কে অবহিত হয়ে সালেম হামাদ আল-আকীল আল-নাবেত সেনাবাহিনীর বর্তমান নেতৃত্ব এবং সামগ্রিক উচ্চমান সম্পর্কে প্রশংসা করেন।
অপারেশন কুয়েত পুনর্গঠনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রশংসনীয় ভূমিকার অনুপ্রেরণায় কাতারেও অনুরূপ উদ্যোগের সম্ভাব্যতা নিয়ে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এছাড়া কাতারের প্রতিনিধি দলটি প্রশিক্ষণ বিনিময় এবং বিশ্বকাপ ফুটবলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বাদক দলের উপস্থিতি নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
সেনাসদরে আসার আগে সেনাকুঞ্জে তিন বাহিনীর একটি চৌকস দলের পক্ষ থেকে কাতার সশস্ত্র বাহিনীর চিফ অব স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেলকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। পরবর্তীতে লেফটেন্যান্ট জেনারেল সালেম, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক এবং বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী প্রধানদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
উল্লেখ্য, সফররত প্রতিনিধিদল গতকাল বাংলাদেশে পৌঁছানোর পর সন্ধ্যায় আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে লেফটেন্যান্ট জেনারেল সালেমের সম্মানে সেনাপ্রধান কর্তৃক আয়োজিত নৈশভোজে অংশগ্রহণ করেন। নৈশভোজের পর একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এ সময়ে কাতারের রাষ্ট্রদূত সিরাইয়া আলি আল-কাহতানি, কাতার সশস্ত্র বাহিনী এবং বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বুধবার (৮ জুন) চট্টগ্রামের ভাটিয়ারিতে অবস্থিত বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমির ৮২তম লং কোর্সের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজে লেফটেন্যান্ট জেনারেল সালেম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে প্যারেড পরিদর্শন ও অভিবাদন গ্রহণ করবেন। রাষ্ট্রপতি প্যারেডে প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রিত হওয়ায় তিনি সেনাবাহিনীর প্রধানকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানান।
কাতার সশস্ত্র বাহিনীর চিফ অব স্টাফের এ ফলপ্রসূ সফরের মধ্য দিয়ে কাতার ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মধ্যে নিবিড় যোগাযোগের নতুন দ্বার উন্মোচিত হলো, যা দুই দেশের পারস্পরিক সম্পর্কোন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সফর শেষে কাতার প্রতিনিধি দলের বুধবার ফেরার কথা রয়েছে।