ফেসবুকে পরিচয়ের পর চার বছরের প্রেম। অবশেষে ভারতের কোলকাতা থেকে সাতক্ষীরায় এসে সংসার পেতেছেন বহ্নিশিখা ঘোষ (২৭)। ধর্ম পরিবর্তন করে হয়েছেন মুসলিম। তার নাম এখন ফারজানা ইয়াসমিন।
স্বামী ইব্রাহিম হোসেন মুন্না (২৫) সাতক্ষীরার তালা উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের জেঠুয়া গ্রামের মৃত রেজাউল ইসলাম আবুঞ্জির ছেলে। জেঠুয়া বাজারে একটি চায়ের দোকান রয়েছে মুন্নার। প্রেমিকা বহ্নিশিখা ঘোষ (ফারজানা ইয়াসমিন) ভারতের কোলকাতার ব্যারাকপুর এলাকার তালপুকুর গ্রামের বিনয় কৃষ্ণ ঘোষের মেয়ে।
ফারজানা ইয়াসমিন বলেন, আমি রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছি। ৪ বছর আগে ফেসবুকে পরিচয় হয় ইব্রাহীন হোসেন মুন্নার সঙ্গে। পরিচয়ের পর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দীর্ঘদিন প্রেম করার পর নিজ ইচ্ছাতে ভারত থেকে সাতক্ষীরার জেঠুয়া গ্রামে এসেছি গত ২৮ মার্চ। সাতক্ষীরা নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে অ্যাফিডেভিট করে হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে মুন্নাকে মুসলিম আইনে বিবাহ করেছি।
বাবার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, আমার বাবা বিনয় কৃষ্ণ ঘোষ ভারতীয় পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। দুই মামা পুলিশ অফিসার। তারা প্রতিনিয়ত আমাকে ও আমার স্বামীর পরিবারকে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছেন। তারা বিয়ের পর থেকে ডির্ভোস দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করে আসছে। আমি আর কখনও ভারতে ফিরব না। এদেশে স্থায়ী নাগরিকত্ব পেতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করছি। আবেদন প্রক্রিয়ার কাজ চলমান রয়েছে। আমি স্বামীর সংসারে সুখে আছি।
স্বামী ইব্রাহিম হোসেন মুন্না বলেন, আমি বয়সে ছোট ও লেখাপড়া কম জানলেও ফারজানা আমাকে অনেক ভালোবাসে। ভারত থেকে এসে আমাকে বিয়ে করেছে। তাকে নিয়ে আমি সুখে-শান্তিতে বসবাস করছি। কিন্তু কিছু মানুষ আমাকেসহ আমার মা রুবিনা বেগম, মামা মো. ফারুক হুসাইন ও নিকট আত্মীয়দের নানাভাবে হুমকি দিচ্ছেন। ২-৩ দিন আগে তালা থানা পুলিশ আমাকে ও আমার স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায়। তবে খারাপ কিছু না পাওয়ায় ঘটনা জেনে-বুঝে আমাদের ছেড়ে দেয়।
তালা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল কালাম বলেন, মেয়েটার বাবা পুলিশ অফিসার ছিলেন। আমরা তাকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তিনি স্বেচ্ছায় পাসপোর্টের মাধ্যমে বাংলাদেশে এসে ধর্মান্তরিত হয়ে বিয়ে করেছেন একটি ছেলেকে। বিয়ের পর ভারতে তার বাড়িতে ফিরে গিয়েছিল মেয়েটি। পরিবারকে জানালে তারা বিয়ে মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানায়। পরে মেয়েটি আবারও বাংলাদেশে চলে আসে। মেয়েটিকে স্থানীয় চেয়ারম্যানের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে।