ফরিদপুরে ইউএনওর ওপর এলাকাবাসীর হামলা

ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশিকুর রহমান চৌধুরীর ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (৪ মে) দুপুর ২টার দিকে উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর গ্রামে আশ্রয়ণ প্রকল্পের জমি নিয়ে দ্বন্দ্বে এলাকাবাসী ইউএনওর ওপর হামলা করে। এতে ইউএনওসহ সাতজন আহত হয়েছেন।

আহত ইউএনও আশিকুর রহমান চৌধুরীকে মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়ার পর বিকেল ৪টার দিকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। বাকিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিশ্চিন্তপুর গ্রামে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণ করার জন্য একটি জায়গা দেখা হয়। জায়গাটি বর্তমানে বিএস রেকর্ডে সরকারি খাস জমি হলেও আরএস রেকর্ডে ব্যক্তি মালিকানাধীন। এ নিয়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসনের বিরোধ চলে আসছিল। বৃহস্পতিবার দুপুরে এলাকার কয়েকজন নারী ওই জমির মালিকানা দাবি করে আশ্রয়ণ প্রকল্পের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেন। খবর পেয়ে ইউএনও আশিকুর রহমান চৌধুরী আনসার সদস্যদের নিয়ে সেখানে যান।

আনসার সদস্যরা নারীদের কাছ থেকে মানববন্ধনের ব্যানার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় নারীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়। আনসার সদস্যরা রাইফেলের বাট দিয়ে কয়েকজন নারীকে আঘাত করেন। একপর্যায়ে এক নারী আহত হন। পরে নারীরা ক্ষুব্ধ হয়ে গাছের ডাল ভেঙে আনসার সদস্যদের ওপর হামলা চালান। এ সময় স্থানীয় মসজিদের মাইকে বিষয়টি জানানো হয়।

পরে এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে ছুটে এসে ইউএনও ও আনসার সদস্যদের ওপর হামলা করে। ওই সময় আনসার সদস্যরা শর্টগানের তিন-চারটি গুলি ছোড়েন। ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ইউএনওর গাড়ি ভাঙচুর করে। পরে মধুখালী থানা পুলিশ ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

ডুমাইন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহ আসাদুজ্জামান জানান, তিনি একটি সালিসে ছিলেন। তিনি জানতেন না ইউএনও ওই এলাকায় এসেছেন। পরে ইউএনওর ফোন পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে আসেন।

ফরিদপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (মধুখালী সার্কেল) সুমন কর জানান, ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পুলিশের একটি টহল দল পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক ঘটনাস্থলে আসেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার বলেন, ইউএনওর বাম চোখে আঘাত লেগেছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেলাই দিয়ে তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়েছে। পুলিশ সুপার মো. শাজাহান ঘটনাস্থলে গিয়েছেন।

ইউএনও আশিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, আমার ওপর হামলা হয়েছে। আমি এখন হাসপাতালে আছি। পরে কথা বলছি।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

আপনার মতামত প্রকাশ করুন

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ