প্রবল শীত ও তুষারঝড়ে যুক্তরাষ্ট্র-কানাডায় ৩৮ মৃত্যু

গত ২২ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া প্রবল শৈত্যপ্রবাহ ও তুষারঝড়ে উত্তর আমেরিকার দুই দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় ৩৮ জনের মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া গেছে। মৃতদের মধ্যে ৩৪ জন যুক্তরাষ্ট্রের, বাকি ৪ জন কানাডার পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার।

মার্কিন সরাকারি কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্টে যাদের মৃত্যু হয়েছে, তাদের সবাই নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের বাফেলো শহরের। গত সপ্তাহ থেকে শুরু হওয়া এই শৈত্যপ্রবাহে ইতিহাসের সবচেয়ে নিম্ন তাপমাত্রা দেখছে বাফেলো।

নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের গভর্নর ক্যাথি হোশুলের জন্ম ও বেড়ে ওঠা বাফেলো শহরে। বিবিসিকে তিনি বলেন, ‘গত বৃহস্পতি-শুক্রবার যে ঝড় হয়েছে, বাফেলোর ইতিহাসে সেটি ছিল সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক ঝড়। একে ঝড় না বলে সাইক্লোন বোমাও বলা যেতে পারে।’

কানাডার মৃতরা সড়ক দুর্ঘটনার শিকার। রোববার ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার মেরিট শহরে এক বাস দুর্ঘটনায় নিহত হন তারা। শহরের পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সড়কের ওপর বিপুল পরিমাণ তুষার জমে যাওয়ায় চাকা পিছলে উল্টে যায় বাসটি। নিহতরা সেই বাসের যাত্রী ছিলেন।

মার্কিন আবহাওয়া দপ্তরের কর্মকর্তারা বিবিসিকে বলেন, বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার যে তুষারঝড় যুক্তরাষ্ট্রের ওপর দিয়ে বয়ে গেছে, সেটির ব্যাপ্তি ছিল দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্য টেক্সাস থেকে সর্বউত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য মাইন পর্যন্ত, অর্থাৎ ৩ হাজার ২০০ কিলোমিটারেরও বেশি। এ ঝড়কে ‘যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের অন্যতম বৃহৎ প্রাকৃতিক দুর্যোগ’বলে শুক্রবার এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে এনডব্লিউএস।

যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তবর্তী প্রদেশ কানাডাতেও পড়েছে ঝড়ের প্রভাব। শুক্রবারের পর থেকে ঝড়ের তেজ কমে গেছে, কিন্তু জাঁকিয়ে বসেছে প্রবল শীত। যুক্তরাষ্ট্রের অনেক অঙ্গরাজ্যে ও শহর তাদের ইতিহাসের সর্বনিম্ন তাপমাত্রায় আছে।

বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার ব্যাপক তুষারঝড়ের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিমানবন্দরের বাতিল হয়েছে ৮ হাজারেরও বেশি ফ্লাইট। হঠাৎ তাপমাত্রা নেমে যাওয়ায় বাড়িঘর গরম রাখতে বিদ্যুতের চাহিদা ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়, বাড়তি এই চাহিদা মেটাতে গিয়ে বিপর্যয় ঘটে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থায়। তুষার ঝড় শুরু হওয়ার পর বৃহস্পতি ও শুক্রবার বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েন দেশটির অন্তত ১৭ লাখ মানুষ।

সরবরাহ ব্যবস্থায় মেরামতের কাজ শুরু হওয়ায় বর্তমানে অবশ্য অনেক এলাকায় ও বাসা-বাড়িতে বিদ্যুত ফিরছে, তবে এখনও দেশটিতে বিদ্যুৎবিহীন আছেন প্রায় ২ লাখ মানুষ। রোববার যুক্তরাষ্ট্রের আবহাওয়া দপ্তরের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘দেশের সাড়ে ৫ কোটি মানুষ এখনও ঝড়ের ঝুঁকিতে আছেন।’

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

আপনার মতামত প্রকাশ করুন

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ