ত্রাণ-রসদের অভাবে ভয়াবহ পরিস্থিতি সিরিয়ায়

গত কয়েক দশকের মধ্যে ভয়াবহতম ভূমিকম্পে কার্যত তছনছ হয়ে গেছে তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চল ও সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল; কিন্তু প্রায় ৫ দিন আগে ঘটা এই দুর্যোগের পর তুরস্কে উদ্ধার তৎপরতা ও ত্রাণ বিতরণ পুরোদমে শুরু হলেও প্রতিবেশী দেশ সিরিয়ার পরিস্থিতি ভয়াবহ।

সিরিয়ার সরকারি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দপ্তরের উদ্ধারকারী বাহিনী হোয়াইট হেলমেট দেশটির উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ আলেপ্পোতে উদ্ধার তৎপরতা ও ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচি পরিচালনার দায়িত্বে আছে। ভূমিকম্পে সিরিয়ার এই প্রদেশটিতে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সবচেয়ে বেশি।

হোয়াইট হেলমেটের কর্মকর্তা ওবাদাহ আলওয়ান বিবিসিকে জানিয়েছেন, একদিকে ভারি ও আধুনিক যন্ত্রপাতির অভাবে উদ্ধার তৎপরতা ঠিকমতো চালাতে পারছেন না তারা, অন্যদিকে ত্রাণসামগ্রীর সরবরাহ না থাকায় আহতদের চিকিৎসা ও খাদ্য সহায়তা প্রদানও গুরুতরভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

বিবিসিকে আলওয়ানি বলেন, ‘চতুর্দিকে চুড়ান্ত এলোমেলো পরিস্থিতি। পুরনো সব যন্ত্রপাতি নিয়ে আমাদের কাজ করতে হচ্ছে। আধুনিক ও ভারী উপকরণ না থাকায় ধ্বংসাবশেষের নিচে চাপা পড়াদের উদ্ধারকাজ বারবার ব্যাহত হচ্ছে; আবার যাদের আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হচ্ছে— তাদের আমরা খাদ্য-চিকিৎসা সহায়তা ঠিকমতো দিতে পারছি না।’

‘বুধবার পর্যন্ত বিভিন্ন ভবনের ধংসাবশেষ থেকে জীবিতদের আর্তি শোনা গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে ক্ষীণ হয়ে এসেছে সেই আর্তি; অর্থাৎ এখনও যারা চাপা পড়ে আছেন, তাদের অনেকে ইতোমধ্যে মারা গেছেন,’ বিবিসিকে বলেন তিনি।

সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় সময় ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে তুরস্ক ও তার প্রতিবেশী দেশ সিরিয়া। ওই ভূমিকম্পের ১৫ মিনিট পর ৬ দশমিক ৭ মাত্রার আরও একটি বড় ভূমিকম্প এবং পরে আরও অনেকগুলো আফটারশক হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএসের তাৎক্ষণিক এক বিবৃতিতে বলা হয়, তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলীয় কাহরামানমারাস প্রদেশের গাজিয়ানতেপ শহরের কাছে ভূপৃষ্ঠের ১৭ দশমিক ৯ কিলোমিটার গভীরে ছিল ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল।

গত প্রায় ৫ দিনে ভয়াবহ এই দুর্যোগে নিহতের সংখ্যা ২১ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। তার মধ্যে সিরিয়া থেকে উদ্ধার করা হয়েছে প্রায় ৪ হাজার মরদেহ।

তবে এই সংখ্যাটি আরও কয়েকগুণ বেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ ভারী যন্ত্রপাতির অভাবে অনেক জায়গায় উদ্ধার তৎপরতা শুরু করা যায়নি।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

আপনার মতামত প্রকাশ করুন

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ