বাংলাদেশের টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনে অর্থনৈতিক সংস্কার জরুরি বলে মনে করছে বিশ্বব্যাংক। কোভিড-১৯ মহামারির সংকট থেকে বর্তমানে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। তবে ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি, আর্থিক খাতের দুর্বলতা, বৈশ্বিক চাপ এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে ঝুঁকিতে রয়েছে পুরো দক্ষিণ এশিয়া। যার ফলে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ব্যাহত হচ্ছে।
মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসে ‘বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক প্রতিবেদনটির বিস্তারিত তুলে ধরেন।
চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছর বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কিছুটা কমিয়ে এনেছে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটির নতুন এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই অর্থবছর জিডিপি ৫.৬ শতাংশ হতে পারে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মুদ্রাস্ফীতি মোকাবিলায় মুদ্রা ও রাজস্ব নীতির মাধ্যমে সংস্কার করা এবং সেইসঙ্গে আর্থিক খাতের দুর্বলতাগুলো সংস্কার দেশের প্রবৃদ্ধি ও দারিদ্র্য হ্রাসের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হবে। একটি একক বাজারভিত্তিক বিনিময় হার আনুষ্ঠানিক চ্যানেলের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহকে আকর্ষণ করতে হবে। এর ফলে অর্থ প্রদানের ভারসাম্য এবং রিজার্ভ জমাতে সহায়তা করবে।
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ফলে বাংলাদেশে জীবনযাত্রার অবস্থার উন্নতি হয়েছে। ২০১৬ সালে চরম দারিদ্র্য ছিল ৯ শতাংশ। ২০২২ সালে তা কমে হয়েছে ৫ শতাংশ, যা লাতিন আমেরিকা এবং ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের দেশগুলোর সঙ্গে তুলনীয়। আঞ্চলিক প্রতিবেদনে দক্ষিণ এশিয়ায় ২০২৪ এবং ২০২৫ সালে গড় প্রবৃদ্ধি ৫.৬ শতাংশ।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, প্রবৃদ্ধি কমার জন্য আর্থিক সংকীর্ণতা, রাজস্ব ঘাটতি ও বৈশ্বিক চাহিদা কমার বিষয়টি অন্যতম দায়ী। ভঙ্গুর রাজস্ব আহরণের কারণে নানা ঝুঁকি রয়েছে। ২০২২ সালে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে গড়ে সরকারি ঋণ ছিল জিডিপি’র ৮৬ শতাংশ। ঋণ খেলাপির ঝুঁকি, ঋণ নেওয়ার খরচ বৃদ্ধি এবং ব্যক্তিগত খাতে ঋণ নেওয়ায় সংকট তৈরি হয়েছে। চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধীরগতি। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে প্রাকৃতিক দুর্যোগ তীব্র হওয়ার কারণে এই অঞ্চলটি প্রভাবিত হবে।