আরব সাগরে সৃষ্ট অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়ের আঘাত হানার দুদিন আগেই উত্তাল হয়ে উঠেছে ভারত-পাকিস্তানের উপকূলীয় এলাকা। মঙ্গলবার ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়ের প্রভাবে উত্তাল ভারতের মুম্বাইয়ের উপকূলে নেমে ডুবে গেছে চার কিশোর। আর ঝড়ের প্রভাবে গুজরাটে প্রবল বৃষ্টি ও তীব্র বাতাসে ধসে যাওয়া দেয়ালের নিচে চাপা পড়ে আরও তিনজন নিহত হয়েছেন।
এদিকে, ঘূর্ণিঝড়ের কবল থেকে বাঁচাতে উপকূলীয় এলাকার হাজার হাজার মানুষকে সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু করেছে পাকিস্তান। অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়’ আগামী বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ভারতের গুজরাট প্রদেশের মান্দভি এবং দক্ষিণ পাকিস্তানের করাচি উপকূলে আঘাত হানতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
আবহাওয়াবিদরা এই ঝড়ের বাতাসের গতি ঘণ্টায় ১২৫ থেকে ১৩৫ কিলোমিটার হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছেন। তবে আঘাত হানার সময় ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়ের বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন তারা।
ভারতের বাণিজ্যিক রাজধানী খ্যাত মুম্বাইয়ের পুলিশের জ্যেষ্ঠ একজন কর্মকর্তা বলেছেন, ‘সোমবার সন্ধ্যায় জুহু সমুদ্র সৈকতে চার কিশোর ডুবে গেছে। এখন পর্যন্ত আমরা দুজনের মৃতদেহ পেয়েছি। বাকি দুজনের খোঁজে এখনও উদ্ধার অভিযান অব্যাহত আছে।’
কর্তৃপক্ষ বলেছে, আরব সাগরের উচ্চ ঢেউ, ভারী বৃষ্টিপাত এবং ঝড়ো হাওয়া গুজরাটের উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হেনেছে। এতে অনেক গাছ উপড়ে গেছে এবং কুচ ও রাজকোট জেলায় প্রাচীর ধসে তিনজন মারা গেছেন।
গুজরাটের সরকার বলছে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে রাজ্যের উপকূলীয় আটটি জেলা ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এসব জেলায় সাগরে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা ও স্কুলে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
ভারতের অনেক অফশোর তেল স্থাপনা ও প্রধান বন্দর রয়েছে গুজরাটে। ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবের আশঙ্কায় এসব প্রতিষ্ঠানের বেশিরভাগের কার্যক্রম স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছে কর্তৃপক্ষ। ১৯৯৮ সালের এক ঘূর্ণিঝড়ে গুজরাটে কমপক্ষে ৪ হাজার মানুষের প্রাণহানি এবং কয়েক মিলিয়ন ডলারের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল।
গুজরাটের ত্রাণ কমিশনার অলোক কুমার পান্ডে বলেছেন, উপকূলীয় জেলাগুলো থেকে ২০ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি মানুষকে ইতোমধ্যে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যার মধ্যে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার কাজ শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।