প্রান্তিক আদিবাসী সম্প্রদায় থেকে নির্বাচিত ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু বলেছেন, নির্বাচনে তার জয় দেশের প্রত্যেক দরিদ্র মানুষের অর্জন। একেবারে দরিদ্র পরিবার থেকে ভারতের রাষ্ট্রপতি পদে আসীন এই নারী বলেন, ‘দরিদ্ররাও স্বপ্ন দেখতে পারেন।’ সোমবার ভারতের প্রধান বিচারপতি এন ভি রমনার কাছে শপথ নেওয়ার পর এসব মন্তব্য করেছেন তিনি।
ভারতের সর্বোচ্চ সাংবিধানিক পদে মুর্মুর আসীন হওয়ার এই ঘটনাকে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি হিসেবে দেখা হচ্ছে। ১৪০ কোটি মানুষের এই দেশটির প্রায় ৮ শতাংশই আদিবাসী সম্প্রদায়ের, আগামী ২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচনের আগে এই পদক্ষেপ ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে।
ভারতের নবনির্বাচিত আদিবাসী নারী রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু প্রথমবারের মতো আলোচনায় আসেন ২০১৭ সালে। ওই সময় ওড়িশার এই আদিবাসী নারীকে দেশটির বর্তমান ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) প্রেসিডেন্ট প্রার্থী করার গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। তিনি তখন ঝাড়খণ্ড রাজ্যের গভর্নরের দায়িত্ব পালন করছিলেন।
সাবেক স্কুলশিক্ষক মুর্মু দ্বিতীয় নারী হিসেবে ভারতের রাষ্ট্রপতির পদে আসীন হয়েছেন। যদিও এই পদ অনেকটা আনুষ্ঠানিক মাত্র। দ্রৌপদী মুর্মুর জন্ম ১৯৫৮ সালে ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ জেলার বাইদাপোসি গ্রামে। ভারতের অন্যতম বৃহৎ আদিবাসী গোষ্ঠী সাঁওতাল সম্প্রদায়ের সদস্য তিনি।
বিজেপির মনোনয়ন পাওয়ার পর গত সপ্তাহে রাজ্যসভা এবং লোকসভার সদস্যদের ভোটে আগামী পাঁচ বছরের জন্য রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছেন দ্রৌপদী মুর্মু। সোমবার শপথ নেওয়ার পর সংসদে দেওয়া ভাষণে ৬৪ বছর বয়সী এই নারী বলেছেন, ‘আমার নির্বাচন প্রমাণ করেছে যে, ভারতের দরিদ্ররাও স্বপ্ন দেখতে এবং তা পূরণ করতে পারেন।’
‘এটি আমার জন্য অত্যন্ত তৃপ্তির বিষয় যে, যারা শতকের পর শতক ধরে বঞ্চিত এবং যারা উন্নয়নের সুফল ভোগ করতে পারেন না, সেই দরিদ্র, নিম্নবিত্ত, পিছিয়ে পড়া এবং আদিবাসীরা আমার মাঝে তাদের প্রতিফলন দেখতে পাচ্ছেন।’
মুর্মুর শপথ গ্রহণকে ‘ভারতের— বিশেষ করে দরিদ্র, প্রান্তিক ও নিম্নবিত্তদের জন্য’ এক পরম মুহূর্ত উল্লেখ করে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ভারতের রাষ্ট্রপতি সশস্ত্র বাহিনীর সর্বোচ্চ কমান্ডার হিসাবে কাজ করলেও নির্বাহী ক্ষমতার অধিকারী প্রধানমন্ত্রী।
তবে দেশের রাজনৈতিক সংকটের সময় প্রেসিডেন্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন। যেমন— দেশটিতে যখন সাধারণ নির্বাচনের ফল সিদ্ধান্তহীন হয়, তখন কোন দল সরকার গঠনের জন্য সেরা অবস্থানে রয়েছে তা ঠিক করতে পারেন প্রেসিডেন্ট।