দক্ষিণ কোরিয়ার সাথে যৌথ আকাশ প্রতিরক্ষা মহড়ার জন্য কোরীয় দ্বীপে পুনরায় বি-১বি বোমারু বিমান মোতায়েন করেছে যুক্তরাষ্ট্র। পিয়ংইয়ং আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের একদিন পর শনিবার এই বিমান মোতায়েন করা হয়েছে বলে দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী জানিয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চিফ অব স্টাফের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র যৌথ বিমান মহড়া পরিচালনা করেছে। যৌথ এই মহড়ায় যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার বিমান বাহিনীর এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানসহ আরও অত্যাধুনিক কিছু বিমানও অংশ নিয়েছে। মহড়ায় কোরীয় দ্বীপে পুনরায় যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনীর বি-১বি বোমারু বিমানও মোতায়েন করা হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এবং দক্ষিণ কোরিয়ার যেকোনও ধরনের বিমান মহড়াকে উত্তর কোরিয়া বিশেষ সংবেদনশীল মনে করে। কারণ উত্তর কোরিয়ার সামরিক বাহিনীর সবচেয়ে দুর্বল শাখা হলো বিমান বাহিনী। এই বাহিনীতে অত্যাধুনিক বিমান ও সৈন্যদের যথাযথ প্রশিক্ষণের ব্যাপক ঘাটতি রয়েছে।
পারমাণবিক অস্ত্র বহনের সক্ষমতা না থাকলেও যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনীর দূরপাল্লার বোমারু শক্তির ‘মেরুদণ্ড’ হিসেবে মনে করা হয় বি-১বি বোমারু বিমানকে। যুক্তরাষ্ট্রের এই বোমারু বিমানের বিশ্বের যেকোনও স্থানে আঘাত হানার ক্ষমতা রয়েছে।
গত সেপ্টেম্বরে উত্তর কোরিয়াকে ‘পারমাণবিক অস্ত্রধারী’ দেশ হিসেবে ঘোষণা দেন কিম জং উন। আর রাষ্ট্রীয় এই তকমা একেবারে ‘অপরিবর্তনীয়’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি। একই সঙ্গে দেশটির পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের আইনেও সংশোধন এনেছেন তিনি।
পুরোনো আইনে কেবল আক্রান্ত হলেই পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি ছিল। কিন্তু সংশোধিত আইনে আত্মরক্ষার জন্যও এই অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র এবং দক্ষিণ কোরিয়ার বিভিন্ন ধরনের সামরিক মহড়ার জবাবে একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে উত্তর কোরিয়া। ২০১৭ সালের পর পিয়ংইয়ং প্রথম পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে দক্ষিণ কোরিয়ার একাধিক গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
এর মাঝেই শুক্রবার নতুন করে আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের (আইসিবিএম) পরীক্ষা চালায় উত্তর কোরিয়া; যা যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডে আঘাত হানতে সক্ষম।
শক্তিশালী এ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা শেষে উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের হুমকি বরদাশত করা হবে না। যদি শত্রুরা হুমকি অব্যাহত রাখে তাহলে সর্বশক্তি প্রয়োগ করে পরমাণু হামলার জবাব দৃঢ়ভাবে পরমাণু অস্ত্র দিয়েই দেওয়া হবে।