প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক কিছু ষড়যন্ত্র সব সময় থাকে। এসব আমি ভয় পাই না। গুলি, গ্রেনেড, বোমা সবই তো মোকাবিলা করে এ পর্যন্ত এসেছি। আমি বিশ্বাস করি আল্লাহ মানুষকে যে কাজ দেন সেই কাজ সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত আল্লাহ তাকে রক্ষা করেন। দেশের মানুষের জন্য কাজ করার যে সুযোগ পেয়েছি এটাই বড় পাওয়া।
বুধবার (১১ অক্টোবর) বেলা ১১টায় টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আয়োজিত গোপালগঞ্জ জেলা, টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়াবাসীর কাছে আমি কৃতজ্ঞতা জানাই। এখান থেকে বারবার নির্বাচিত হয়েছি। সবাই তো যার যার নিজের এলাকা দেখে, কিন্তু আমাকে তো ৩০০ আসন ও ১৭ কোটি মানুষকে দেখতে হয়। আমার সৌভাগ্য এখানেই যে টুঙ্গিপাড়া-কোটালীপাড়াবাসী আমাকে ভোট দেয়। আমার জন্য কাজ করে, আমাকে দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দেয়। ফলে আমি দেশের মানুষের জন্য নিবেদিত প্রাণ হয়ে কাজ করতে পারি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার মা-বাবা-ভাই নেই। কিন্তু আমার সবই আছে। আমি পেয়েছি বিশাল আওয়ামী লীগ সংগঠন। আমি পেয়েছি কোটালীপাড়া ও টুঙ্গিপাড়াসহ সারা দেশের মানুষ। এরাই আমার পরিবার, আমার আপনজন। আপনজন পাশে না থাকলে আসলে কোনো কাজেই সফলতা অর্জন করা যায় না। আজকে যতটুকু অর্জন করতে পেরেছি সেই অবদান কিন্তু কোটালীপাড়া-টুঙ্গিপাড়াবাসীর। এরা আমাকে সব সময় পাশে থেকে সমর্থন করেছে। কাজেই তাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করছি। সেই সঙ্গে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে, কারণ সামনে নির্বাচন।
মতবিনিময় সভা শেষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার কথা রয়েছে সরকারপ্রধানের।
এর আগে আজ বেলা ১১টার দিকে টুঙ্গিপাড়ায় নিজ বাড়ি থেকে প্রটোকল ভেঙে আধা কিলোমিটার হেঁটে উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে যান প্রধানমন্ত্রী। সেখানে পৌঁছানোর পর স্থানীয় নেতাকর্মীরা স্লোগানে স্লোগানে প্রধানমন্ত্রীকে বরণ করে নেন।
এর আগে ছোট বোন শেখ রেহানা ও তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টায় গণভবন থেকে রওনা হয়ে সড়কপথে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে পৌঁছে ৮২ কিলোমিটার রেলপথ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে সেখানে আয়োজিত সুধী সমাবেশে যোগ দেন সরকারপ্রধান।
এরপর মাওয়া স্টেশন থেকে থেকে রেলযোগে পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে দুপুর ১টা ৫৯ মিনিটে ভাঙ্গা রেলস্টেশনে এসে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীরা। এরপর তিনি ভাঙ্গা ডা. আবু ইউসুফ স্টেডিয়ামে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক জনসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন।
জনসভায় বক্তব্য শেষে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় নিজ বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হন। বিকেল ৪টা ৫৫ মিনিটের দিকে টুঙ্গিপাড়া পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। এ সময় স্থানীয় নেতাকর্মীরা স্লোগানে স্লোগানে প্রধানমন্ত্রীকে বরণ করে নেন। পরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে নিজ বাড়িতে যান তিনি। সেখানে রাত্রিযাপন করেন প্রধানমন্ত্রী।