কাঁচা বাজারে সবচেয়ে দামি সবজি হিসেবে দাপট দেখাচ্ছে সিম, টমেটো আর গাজর। এগুলো ১২০ থেকে ১৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর অন্যান্য সবজির দাম দুই অংকের ঘরে থাকলেও ৫০ টাকার নিচে কোনো সবজি নেই।
শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বেশ কিছু বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কাঁচা বাজারে সবচেয়ে বেশি দামে সিম, টমেটো ও গাজর বিক্রি হলেও চড়া দামের তালিকায় আরও রয়েছে বরবটি, শসা, করলাসহ অন্যান্য সবজিও।
আজকের বাজারে প্রতি পিস লাউ ৬০-৭০, কাঁচকলা প্রতি হালি ৪০ দরে বিক্রি হচ্ছে। আর বরবটি ৮০-৯০, করলা ৮০, বেগুন ৬০-৭০, পটল ৪০-৫০, কাঁকরোল ৬০, ধুন্দল ৬০, পেঁপে ২০-৩০, ঝিঙে ৪০-৫০, ঢেঁড়স ৪০, শসা ৮০ ও টমেটো ১২০-১৪০, সিম ১৪০ ও চায়না গাজর ১৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
রাজধানীর মহাখালীর কাঁচা বাজারে বাজার করতে এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী রুবেল আহমেদ। তবে বাজারের এমন ঊর্ধ্বগতি বিষয়ে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মাছ, মাংস, বয়লার মুরগির অতিরিক্ত দামের কারণে ওসব কিনতেই পারি না। পরিস্থিতি বিবেচনা করে মনে করেছিলাম বাসায় সবজি রান্না করে খাওয়া প্রতি বেশি জোর দেব। কিন্তু সবজির বাজারে এসে দেখি এখানেও উল্টো চিত্র। সবকিছুরই বাড়তি দাম। ৫০ টাকার নিচে কোনো সবজি নেই।
তিনি বলেন, শখ করে যে সিম কিনব, তার তো উপায়ই নেই। কারণ সিমের কেজি ১৪০ টাকা। টমেটো ও গাজরের একই দাম। এছাড়া শসা, বরবটি ৮০/৯০ টাকা কেজি। আমাদের নাগালের মধ্যে বলতে গেলে কোনো সবজিই নেই। কী খেয়ে আমরা টিকে থাকব?
গুলশান লেকপাড় সংলগ্ন একটি কাঁচা বাজারে হাবিবুর রহমান নামের একজন গার্মেন্টস কর্মী এসেছেন বাজার করতে। কিন্তু বাজার পরিস্থিতি দেখে তিনি পরিমাণের চেয়ে কম সবজি কিনে বাসায় ফিরছিলেন। এ সময় কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি বলেন, আগে সবজি কিনতে এত দোকান ঘুরিনি। এখন দরদাম করতে করতে বিভিন্ন দোকানে ঘুরতে হয়, কারণ যদি কোথাও থেকে কম দামে কিনতে পারি! বাজারে কম দামের কোনো সবজি নেই। শুধু পেঁপে আর আলুর দাম কম, এছাড়া যত রকমের সবজি আছে সবগুলোর দাম বেশি। সবজির দাম করলেই ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি। বয়লার মুরগিসহ মাছ-মাংসর অতিরিক্ত দামের কারণে সেগুলো কেনার পরিস্থিতি নেই নিম্ন আয়ের মানুষের।
বাজার পরিস্থিতির ব্যাখ্যা দিয়ে মালিবাগের খুচরা সবজি বিক্রেতা নাছির উদ্দিন বলেন, বাজার আসলে একটু বাড়তি যাচ্ছে। কাঁচা বাজারে সবচেয়ে বেশি দাম যাচ্ছে নতুন উঠা সিমের। সেই সঙ্গে আমদানি করা টমেটো আর চায়না গাজরের। সিম, টমেটো ও গাজর সব বাজারেই মোটামুটি ১৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া শসা, বরবটির দামও কিছুটা বাড়তি।
তিনি বলেন, নতুন সবজি উঠার আগ পর্যন্ত দাম একটু বাড়তি থাকবে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা সবজিগুলোর পরিবহন খরচ আগের চেয়ে অনেক বেশি বেড়ে গেছে। সেই প্রভাব পড়েছে বাজারে। আমরা পাইকারি বাজারে কিনতে গেলেও আগের চেয়ে বেশি দাম পড়ছে, সেইভাবেই খুচরা বাজারেও এটার প্রভাব দেখা যাচ্ছে।