এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফলে অসন্তোষ নিয়ে সাধারণ ৯টি শিক্ষাবোর্ড এবং মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাবোর্ড মিলিয়ে মোট ২ লাখ ৭৮ হাজার ৮৫৪টি আবেদন জমা পড়েছে। এর মধ্যে ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা, বাংলা, ইংরেজি, গণিত এবং ইংরেজি ১ম ও ২য় পত্র বিষয়ের ফল পুনর্মূল্যায়ন চেয়ে বেশি আবেদন করেছে শিক্ষার্থীরা।
আবেদনকারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা লক্ষাধিক। অনেকেই একাধিক বিষয়ের ফল পুনর্মূল্যায়নের আবেদন করেছে। বিভিন্ন বোর্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং টেলিটক থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে৷
এর আগে গত ২৯ নভেম্বর থেকে পুনর্নিরীক্ষার আবেদন শুরু হয়। ৫ ডিসেম্বর শেষ হয় আবেদনের সময়। আগামী ২৫ ডিসেম্বর পুনর্নিরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হবে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট শিক্ষাবোর্ড কর্মকর্তারা জানান, অনেক শিক্ষার্থী একাধিক বিষয়ের উত্তরপত্র চ্যালেঞ্জ করে আবেদন করেছে। তার মধ্যে ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান, রসায়ন, পদার্থবিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান, বাংলা এবং ইতিহাস ও সভ্যতা বিষয়ে আবেদন বেশি হয়েছে। এসব বিষয়ে আশানুরূপ নম্বর না পাওয়ায় তারা পুনর্মূল্যায়নের জন্য আবেদন করেছেন। পুনর্নিরীক্ষার মাধ্যমে উত্তরপত্রে প্রাপ্ত নম্বর নতুন করে যোগ করে ফলাফল প্রকাশ করা হবে। এতে কিছু সংখ্যক পরীক্ষার্থীর ফলাফল পরিবর্তন হতে পারে।
>>বোর্ড ভিত্তিক আবেদন
ঢাকা শিক্ষাবোর্ড
এ বোর্ডে ফলাফল পুনর্নিরীক্ষার আবেদন এসেছে ৬৮ হাজার ১১০টি। আবেদনকারীর সংখ্যা ৩৬ হাজারের অধিক। এ বোর্ডে বাংলা, ইংরেজি, গণিত এবং ইতিহাস ও সভ্যতা বিষয়ে বেশি আবেদন জমা হয়েছে।
যশোর শিক্ষাবোর্ডে
এ বোর্ডে আবেদনপত্র ১২ হাজার ৮১৭টি, আবেদনকারী ৮ হাজারের বেশি। তাদের মধ্যে ইতিহাস ও সভ্যতা বিষয়ে ২ হাজার ৪৮৪টি, ইংরেজি প্রথম পত্রে ১ হাজার ৫৮৩টি এবং ইংরেজি ২য় পত্রে ১ হাজার ১৭৫টি আবেদন জমা পড়েছে।
দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডে
এ বোর্ডে মোট আবেদন ২৮ হাজার ১৬৫টি, আবেদনকারী প্রায় ১৬ হাজার। এ শিক্ষাবোর্ডে সবচেয়ে বেশি আবেদন গণিতে ৫ হাজার ৯৮৩টি, ইতিহাসে ৪ হাজার ৬৩৭টি এবং ইংরেজি ১ম ও ২য় পত্রে ৩ হাজার ১১১টি আবেদন পড়েছে।
অন্যদিকে বরিশাল শিক্ষাবোর্ডে ১০ হাজার ৯৯৪টি আবেদন পড়েছে। আবেদনকারী প্রায় ৯ হাজার। এছাড়া চট্টগ্রাম বোর্ডে ২৮ হাজার ৬০৭টি, কুমিল্লা বোর্ডে ২৩ হাজার ১০৩টি, ময়মনসিংহে ১৭ হাজার ৩১৯টি, রাজশাহী বোর্ডে ৩১ হাজার ৫৪৪টি এবং সিলেট শিক্ষা বোর্ডে ২০ হাজার ১৫৫টি আবেদন করেছেন শিক্ষার্থীরা।
মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড
আবেদন জমা হয়েছে ২৫ হাজার ৫০২টি। আবেদনকারী ১৬ হাজার ৮৩৩ জন। এর মধ্যে গণিতে সবচেয়ে বেশি ১১ হাজার ১৩৯ শিক্ষার্থী পুনর্মূল্যায়নের আবেদন করেছে।
কারিগরি শিক্ষাবোর্ড
কারিগরিতে ১৩ হাজার ৩১২টি আবেদন করা হয়েছে।
সব মিলিয়ে দেশের ১১টি শিক্ষাবোর্ডের অধীনে এবার ২ লাখ ৭৮ হাজার ৮৪৫টি আবেদন জমা হয়েছে। আবেদনকারীর সংখ্যা এক লাখের অধিক।
এ বছর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় গড় পাসের হার ৮৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ। আগের বছর এ হার ছিল ৯৩ দশমিক ৫৮ শতাংশ। অর্থাৎ গত বছরের তুলনায় এবার পাসের হার কমেছে ৬ দশমিক ১৪ শতাংশ। পাসের হার কমলেও বেড়েছে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা। এ বছর জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ লাখ ৬৯ হাজার ৬০২ জন শিক্ষার্থী। আগের বছর এই সংখ্যা ছিল এক লাখ ৮৩ হাজার ৩৪০ জন।