এপ্রিল থেকে ডিএনসিসিতে নগদ লেনদেন হবে না: মেয়র আতিক

আগামী ১ এপ্রিল থেকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) সকল অঞ্চলে অনলাইনের মাধ্যমে হোল্ডিং ট্যাক্স আদায় করা হবে জানিয়ে মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেছেন, ‘কোনও অবস্থাতেই ১ এপ্রিলের পরে ডিএনসিসিতে নগদ টাকায় লেনদেন করা হবে না। এখন থেকে অটোমেশনের মাধ্যমে ট্যাক্সসহ অন্যান্য সকল বিল নেওয়া হবে। বিদেশে বসেও যে কেউ ট্যাক্স দিতে পারবেন।’

বুধবার (৩০ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর গুলশান-২ এ নগর ভবনের হলরুমে রাজস্ব বিভাগের অটোমেশন কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ ঘোষণা দেন।

আগে ট্যাক্স পরিশোধে নানা হয়রানির কথা তুলে ধরে এসময় মেয়র বলেন, ‘নগরবাসীর হয়রানি ও ভোগান্তি বন্ধ করতেই এমন ব্যবস্থা। ক্যাশলেস (নগদ টাকা ছাড়া) লেনদেনের মাধ্যমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে। অটোমেশনের মাধ্যমে নগরবাসী যেমন ঘরে বসে কাঙ্খিত ডিজিটাল সেবা পাবেন, ঠিক তেমনি এর ফলে লাঘব হবে মধ্যসত্ত্বভোগীদের দৌরাত্ম এবং সাশ্রয় হবে সকলের সময়, কর্মঘণ্টা, কমবে গ্রাহকের ভোগান্তি ও হয়রানি।’

নগরবাসীর উদ্দ্যেশে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘ইমেইল এড্রেস, ফোন নম্বর ও জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে খুব সহজেই একটি একাউন্ট খুলে ট্যাক্স দেওয়া যাবে। আপনারা এই তিনটি তথ্যের মাধ্যমে ঘরে বসেই অনলাইনে ট্যাক্স পরিশোধ করুন।’

অনলাইনে বাড়ির মাপ অনুযায়ী হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধ করার আহ্বান জানান মেয়র। তিনি বলেন, ‘রাজউক, বিদ্যুৎ বিভাগ এবং ওয়াসা এই তিনটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সিটি করপোরেশনের চুক্তি হচ্ছে। এর মাধ্যমে সিটি করপোরেশন জানবে বাড়িটি কত স্কয়ার ফিটের। চাইলেও বাসার মাপ কম উল্লেখ করে ট্যাক্স ফাঁকি দেওয়া যাবে না।’

রাজধানীর কিছু এলাকার বাসিন্দা কিছু ক্ষেত্রে বেশি সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেন উল্লেখ করে মেয়র বলেন, ‘সেসব এলাকায় তুলনামূলক ট্যাক্স রেট কিছুটা বেশি হবে।’

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘গুলশান-বনানী-বারিধারার মতো অভিজাত এলাকা এবং যাত্রাবাড়ীর পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ অন্যান্য ইউটিলিটিক্যাল সার্ভিসের চার্জ যদি সমান হয়, তাহলে সবাই তো অভিজাত এলাকায় থাকতে চাইবে। কেউ তো যাত্রাবাড়ী বা কম সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত এলাকায় থাকবে না। তাই জোনভিত্তিক সার্ভিসের মূল্য নির্ধারণ করা এখন সময়ের দাবি।’

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের রাজস্ব আদায়ের কার্যক্রম অটোমেশন করার উদ্যোগের প্রসংশা করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, ‘অটোমেশিনের মাধ্যমে সত্যিকার অর্থে নাগরিক সেবা সহজীকরণের পাশাপাশি স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা সম্ভব। অটোমেশন ব্যবস্থাপনায়ও কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে, তবে সেগুলোকে মোকাবিলা করতে হবে। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে”

অনুষ্ঠানে রাজস্ব অটোমেশন কার্যক্রম সম্পাদনের লক্ষ্যে ডিএনসিসির সাথে ১০টি ব্যাংক ও একটি মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস কোম্পানির সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। ব্যাংকগুলো হল- ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড, মধুমতি ব্যাংক লিমিটেড, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক লিমিটেড, সিটি ব্যাংক লিমিটেড, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক লিমিটেড, ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড, ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড, ওয়ান ব্যাংক লিমিটেড এবং মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ট্রাস্ট আজিয়াটা ডিজিটাল লিমিটেড।

2
উল্লেখ্য, ডিএনসিসির সঙ্গে আগেই নগদ ও বিকাশসহ সোনালী ব্যাংক লিমিটেড, জনতা ব্যাংক লিমিটেড, ডাচ বাংলা ব্যাংক লিমিটেড, মার্কেন্টাইল ব্যাংক লিমিটেড এবং প্রাইম ব্যাংক লিমিটেডের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর সম্পন্ন হয়।

ডিএনসিসির প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুল হামিদ মিয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, নগর গবেষণা কেন্দ্রের সভাপতি অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, দ্যা ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন, ডিএনসিসিতে কাউন্সিলর ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং ডিএনসিসি এলাকার বিভিন্ন সোসাইটির প্রতিনিধিরা।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

আপনার মতামত প্রকাশ করুন

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ