পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটির আগেই সর্বস্তরের শ্রমজীবী মানুষের বেতন-ভাতা ও ঈদ বোনাস পরিশোধ করার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন।
শনিবার (২৪ জুন) যৌথ এক বিবৃতিতে ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান মালিকদের প্রতি এই আহ্বান জানান।
শ্রমিক নেতারা বলেন, গার্মেন্টস, শিল্প-কলকারখানা, সরকারি-বেসরকারি দপ্তর ও প্রাতিষ্ঠানিক-অপ্রাতিষ্ঠানিক সকল খাতের শ্রমিকদের বকেয়া বেতন, চলতি মাসের বেতন-ভাতা ও ঈদ বোনাস ঈদের ছুটির আগেই পরিশোধ করার লক্ষ্যে রাষ্ট্র ও মালিকপক্ষকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।
নেতারা বলেন, শ্রমিকরা যা বেতন-ভাতা পায় তা দিয়ে তাঁদের সংসার চলে না। অন্যদিকে দ্রব্যমূল্যের চরম ঊর্ধ্বগতির কারণে স্বল্প আয়ের শ্রমিকদের সঞ্চয় বলে কিছু নেই। ফলে ঈদ উৎসবের সময় পরিবার-পরিজনের জন্য নতুন কাপড় ও সেমাই-চিনির ব্যবস্থা করার জন্য ঈদ বোনাসের ওপর শ্রমিকদের নির্ভরশীল থাকতে হয়। আমরা আশা করি শ্রমিকদের এই নির্ভরতাকে মালিকপক্ষ যথাযথ সম্মানের সাথে পূর্ণতা দেবেন।
‘দেশের বহু শিল্প-কলকারখানার মালিকরা যথা সময়ে ঈদ বোনাস ও বেতন-ভাতা পরিশোধ করলেও অসংখ্য মালিকরা শ্রমিকদের বেতন-ভাতা ও ঈদ বোনাস নিয়ে টালবাহানা করে। ঈদের আগে কোনো ধরনের নোটিশ ছাড়াই কলকারখানা বন্ধ করে দেন। এতে শ্রমিকদের মনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। শ্রমিকরা বাধ্য হয়ে বেতন-ভাতার দাবিতে রাজপথে নেমে আসে। এতে প্রতি বছর একটি অপ্রীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। এ বছরও ইতোমধ্যে অতীতের ন্যায় একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। আমরা অপ্রীতিকর সমস্যার স্থায়ী সমাধান চাই। আমরা চাই না শ্রমিকরা কর্ম ছেড়ে রাজপথে নেমে আসুক। এতে মালিক-শ্রমিক উভয়পক্ষের ক্ষতি। আমরা মালিক-শ্রমিকের মধ্যে সুসম্পর্ক চাই।’
তারা আরও বলেন, দেশের একটি বিশাল সংখ্যক শ্রমিকরা অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মরত। রাষ্ট্রের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে এদের অবদান অস্বীকার করা যায় না। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে দৈনন্দিন শ্রমের বিনিময়ে জীবন অতিবাহিত করা শ্রমিকদের ঘরে ঈদের আনন্দ পৌঁছায় না। এক্ষেত্রে রাষ্ট্র চাইলে এই সকল শ্রমিকদের ঘরে ঈদের আনন্দ পৌঁছানো সম্ভব।
অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের তালিকা করে তাদের জন্য বিশেষ প্রণোদনা দেওয়ার দাবি জানায় সংগঠনটি।