রাজধানীর বাড্ডা এলাকার বাসিন্দা মমতা আক্তার। স্বামীর একমাত্র আয় দিয়েই চলে তার পুরো পরিবার। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির এই বাজারে ‘নুন আনতে পান্তা ফুরায়’ অবস্থা মমতার।
শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) মধ্য বাড্ডার বাজারে সাপ্তাহিক বাজার করতে এসেছেন তিনি। গরুর মাংসের দোকান ঘুরে অবশেষে মুরগি আর মাছ কিনে বাসায় ফিরেছেন।
মমতা আক্তার বলেন, গরুর মাংসের অনেক দাম। আমাদের মতো নিম্ন আয়ের মানুষরা কি আর এত দামে মাংস কিনে খেতে পারবে?
তিনি বলেন, প্রায় সময়ই বাসায় মেহমান আসে। ওই সময়টাতে তো অন্তত মাংসটা জরুরি। সবমিলিয়ে দামটা একটু কমলে তো ভালো হয়।
শুধু মমতা আক্তার নয়, মাংসের দাম নিয়ে দীর্ঘশ্বাস মধ্য ও নিম্নবিত্ত প্রায় প্রতিটি মানুষের। তাদের দাবি, অন্তত যেন মুরগির দামটা নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়।
একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন মাহমুদুল হাসান। তিনি বলেন, বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থায় সবার পক্ষে মাংস কিনে খাওয়া সম্ভব না। মাংস কেনার পর অন্য জিনিস কিনতে গেলে টানাপড়েনে পড়তে হয়। আমাদের চেয়ে নিম্ন শ্রেণির যারা রয়েছেন, তাদের জন্য বিষয়টি আরও কঠিন।
এদিকে দাম পক্ষে ব্যবসায়ীরাও। তারা বলছেন, দাম কম থাকলে বাজারে ক্রেতার সংখ্যা বাড়ে। আমরাও চাই দাম কম হোক।
মাংস বিক্রেতা নূর হোসেন বলেন, আজ বাজারে প্রতিকেজি গরুর মাংস বিক্রি করছি ৬৮০ টাকায়। কলিজার দামও একই। এছাড়া, ৯০০-৯৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে খাসির মাংস।
তিনি বলেন, গরুর মাংস দীর্ঘদিন ধরে এই দামে বিক্রি করছি। সময়টা এখন সবার জন্যই খারাপ। মানুষের কাছেও টাকা-পয়সা কম। তাহলে দাম বাড়লে মানুষ কীভাবে কিনবে?
এদিকে গত সপ্তাহে বাজারে ব্রয়লার মুরগির কেজি ছিল ১৭০-১৮০ টাকা। আজকের বাজারেও দাম একই।
মুরগি বিক্রেতা ফজল হকের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, আজ বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭০-১৮০ টাকা। এছাড়া, লেয়ার (লাল) ২৮০ টাকা ও পাকিস্তানি বিক্রি হচ্ছে ৩২০ টাকা কেজিতে।
দাম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখন মুরগি বাসায় নিতে গেলে আমাদেরও ভাবতে হয়। এখন মন চাইলেই নিয়ে খাওয়া সম্ভব হয় না।