এলিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) কামরুল হাসান বলেছেন, কিছু তরুণ-তরুণী গত ২২ ডিসেম্বর ধর্মের ভুল ব্যাখ্যায় ঘর ছেড়েছিল। পরে সবাই ভুল বুঝতে পেরে তাদের পরিবারের কাছে যাওয়ার জন্য ইচ্ছা পোষণ করেছে। আমরা ডিরেডিকালাইজ কর্মসূচির আওতায় তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিচ্ছি।
সোমবার (২ জানুয়ারি) দুপুরে র্যাব সদর দপ্তরে কথিত হিজরতের নামে ঘর ছাড়া ৯ তরুণ-তরুণীকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
কামরুল হাসান বলেন, র্যাব যেসব কার্যক্রম করে তার মধ্যে অভিযান একটি ক্ষুদ্র অংশ। আমাদের সামগ্রিক কার্যক্রম অভিযানের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখিনি। গত ২২ ডিসেম্বর ৯ জন তরুণ-তরুণী কথিত হিজরতে ঘর ছেড়েছিল। ফলে তাদের অনেকের পরিবার থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন এবং র্যাবের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। বিভিন্ন তথ্যের মাধ্যমে আমরা চট্টগ্রাম থেকে ৯ জনকে আমাদের হেফাজতে নেই। তাদের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। তাদেরকে আমরা কাউন্সিলিং করেছি। পরে সবাই ভুল বুঝতে পেরে তাদের পরিবারের কাছে যাওয়ার জন্য ইচ্ছা পোষণ করেছে।
তিনি বলেন, আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছিলেন, ‘নিশ্চয় দ্বীন সহজ। দ্বীন নিয়ে যে বাড়াবাড়ি করে সে কখনও জয়ী হতে পারে না। কাজেই তোমরা মধ্যপন্থা অবলম্বন করো, মধ্যপন্থার নিকটে থাকো।’ কিন্তু সারাবিশ্বে অনেকেই ধর্মের অপব্যাখ্যায় উদ্বুদ্ধ হয়ে মধ্যপন্থা থেকে সরে এসে উগ্রবাদী চিন্তা-চেতনায় উদ্বুদ্ধ হচ্ছে। তারা অরাজকতা, বিশৃঙ্খলা করছে। আমরা এ ধরণের অরাজকতা এড়ানোর জন্য কাজ করছি। র্যাব বিভিন্ন জঙ্গিগোষ্ঠী, তাদের নেতাদের ও বিভিন্ন পর্যায়ের সদস্যদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসছে।
তিনি আরো বলেন, ২০১৬ সালে হলি আর্টিজান হামলার পর জঙ্গিদের আইনের আওতায় আনা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতার কারণে জঙ্গিবাদ স্থবিরতা হয়ে যায়। অভিযানের পাশাপাশি যারা বিভিন্নভাবে বিভ্রান্ত হয়ে প্রাথমিক পর্যায়ে থাকে, তাদের ডিরেডিক্যালাইজেশনের মাধ্যমে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করি। যাতে তারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারে।
এ ধারাকে বেগবান করতে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী র্যাব ডিরেডিক্যালাইজেশন শুরু করে। আমরা এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে ২০ জনকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছি। তাদের সঙ্গে সবসময় যোগাযোগ রাখি যাতে তারা কোনোভাবে পূর্বের ভ্রান্ত ধারণাকে পুনরুজ্জীবন না করতে পারে।
অভিযান সামগ্রিক কার্যক্রমের একটি ক্ষুদ্র অংশ উল্লেখ করে র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক বলেন, যাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিচ্ছি তাদের বলবো, ব্যক্তিগতভাবে আমরা একজন ব্যক্তি হতে পারি কিন্তু পরিবারের কাছে আমরা কিন্তু গোটা পৃথিবী। পিতার কাছে একজন সন্তান, স্বামীর কাছে স্ত্রী বা স্ত্রীর কাছে স্বামী অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এ বিষয় মাথায় রেখে আমরা যদি পরিবারের কাছে থাকতাম তাহলে কখনো ভুল ধারণা থেকে বিপথগামী হতাম না।