গতকাল শুক্রবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। এরই মধ্যে ৫০ দেশের প্রায় ৮০০০ জন বিদেশি মেহমান এখন ইজতেমা ময়দানে অবস্থান করছেন। বিদেশিদের সহযোগিতার জন্য সার্বক্ষণিক তাদের পাশে থাকছেন বাংলাদেশিরা। আয়োজকরা জানিয়েছে, শনিবার ও রোববার আরও বিদেশি মেহমানরা ইজতেমায় আসছেন।
ইজতেমা আয়োজকরা জানান, শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত বিশ্বের ৫০টি দেশের প্রায় ৮০০০হাজারের বেশি বিদেশি মেহমান ইজতেমায় উপস্থিত হয়েছেন। এর মধ্যে ভারত, পাকিস্তান, কুয়েত, সৌদি আরব, আফগানিস্তান, জাপান, ওমান, কানাডা, মোজাম্বিক, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, কিরগিজস্তান, সিঙ্গাপুর, ইতালি, জর্দান ও যুক্তরাজ্য অন্যতম।
বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের মিডিয়া সমন্বয়ক মোহাম্মদ সায়েম জানান, মোট ৫০টি দেশ থেকে ৮ হাজারের বেশি মেহমান ইজতেমায় এসেছেন। আগত মেহমানদের মধ্যে ইংরেজি ভাষাভাষী রয়েছেন ২ হাজার ৭৯৮ জন, উর্দু ভাষাভাষী ১ হাজার ৫৫০ জন৷ এছাড়া পশ্চিমবঙ্গের ১ হাজার ৮৬৫ জনও এসেছেন ইজতেমায়।
মাঠের এক পাশে কামারপাড়া সেতুসংলগ্ন একটি বিশাল তাঁবুতে রাখা হয়েছে তাদের। তাদের খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে ইজতেমা আয়োজকদের পক্ষ থেকে। তাদের সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা নিশ্চিতের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
ইন্দোনেশিয়া থেকে আগত মুসল্লি মুসলিম আহমদ ফওজী বলেন, আমি ইন্দোনেশিয়া থেকে ইজমেতায় এসেছি৷ এখানকার মুসলমানরা খুবই বন্ধুসুলভ আচরণ করছেন। তারা আমাদের সকল কাজে সহায়তা করছেন। ইজতেমায় আসতে পেরে আমরা খুব খুশি। এর আগে আমি গোপালগঞ্জের কয়েকটি মসজিদে সফর করেছি৷
ইন্দোনেশিয়ার আরেক মুসল্লি ইদি আজওয়ার বলেন, বাংলাদেশের মুসলমানরা খুব অতিথিপরায়ণ। একইসাথে তারা ধর্মভীরুও৷ বাংলাদেশে এসে খুব ভালো লাগছে। আমি আগামীতেও এ দেশে আসতে চাই।
ইজতেমার এ পর্বে ভারতের বিশিষ্ট আলেম মাওলানা সাদ কান্ধলভীর তিন ছেলেসহ প্রায় ৫০ জন আলেমের এক জামাত অংশ নিয়েছে।
শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) বাদ ফজর আম বয়ানের মধ্যে দিয়ে শুরু হয় ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের প্রথম দিনের আমল। শুক্রবার থেকেই ইজতেমা ময়দান কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে যায়। বিভিন্ন জেলা থেকে মুসল্লিরা বাস, ট্রাক, পিকআপ, ট্রেন ও নৌ-পথে ময়দানের উদ্দেশ্যে আসেন।
এদিকে বিশ্ব ইজতেমায় বিদেশি মেহমানদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থাগ্রহণ করেছে ইজতেমা কর্তৃপক্ষ। বিদেশি মেহমানদের খিত্তাকে ঘিরে বিশেষ নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। বিদেশি খিত্তার পাশে পুলিশ, র্যাবসহ সব বাহিনীর উপনিয়ন্ত্রণ কক্ষ স্থাপন করা হয়েছে। বিশ্ব ইজতেমায় বিদেশি মেহমানদের থাকা-খাওয়া, যাতায়াত ও ভ্রমণের ওপর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
বিদেশি খিত্তার সামনে দায়িত্বে থাকা টঙ্গী পশ্চিম থানার ওসি সাখাওয়াত হোসেন বলেন, বিদেশি মেহমানদের জন্য বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থাগ্রহণ করা হয়েছে।
এদিকে বিশ্ব ইজতেমায় আসা বিদেশি মেহমানদের নিরাপত্তায় নেয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। ময়দানে তাদের জন্য বিশেষ জায়গায় থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আর তাদের ঘিরে আইনশৃংখলাবাহিনী কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছে জানিয়েছে র্যাব।