টানা ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে সিলেটের প্রধান প্রধান নদীরপানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে প্লাবিত হয়েছে জেলার নিম্নাঞ্চল। এজন্য চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন স্থানীয়রা।
সিলেট সদরের বেশ কিছু নিম্নাঞ্চল বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। উপজেলার সারি-গোয়াইন নদীর পানি উপচে আশপাশের এলাকায় বন্যার পানি বাড়ছে। এরই মধ্যে বেশ কিছু বাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি প্রবেশ করেছে। বন্যার প্রাদুর্ভাবের কারণে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে।
সিলেট সদর উপজেলার পুরান কালারুকা গ্রামের তোফায়েল আহমেদ জানান, এক মাস আগে বন্যার পানি ঘরে প্রবেশ করেছিল। ঠিক এক মাস পর আবার ঘরে পানি প্রবেশ করেছে। আগের বন্যার চেয়ে এবারের বন্যার পানির স্তর ঊর্ধ্বমুখী। এখনো আবহাওয়া প্রতিকূল। বন্যার পানি বেড়েই চলেছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পোহাতে হচ্ছে।
তিনি আরো জানান, বুধবার সকাল ৬টায় গ্রামের রাস্তাঘাটের নিচে বন্যার পানি ছিল। কিন্তু মাত্র চার ঘণ্টায় রাস্তাঘাট ডুবে গিয়ে বাড়ি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি প্রবেশ করেছে। এতো দ্রুত পানি বাড়ায় সবাইকে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
এদিকে, কানাইঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, জকিগঞ্জ ও জৈন্তাপুর উপজেলার নিম্নাঞ্চলে ফের প্লাবিত হয়েছে। গত এক মাস আগের সিলেট সদরের উত্তর অংশের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছিল। সেই প্লাবনের পানির চেয়ে এবারের প্লাবনের পানির স্তর ঊর্ধ্বমুখী। উপজেলাগুলোতে বহমান নদীগুলোর পানি সড়ক, বাসা-বাড়িতে পানি উঠছে। কোনো কোনো বাড়িতে বন্যার পানিতে টইটুম্বুর করছে বলে জানা গেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, উজানে ভারী বৃষ্টির ফলে নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে। এজন্য সতর্কতা জরুরি।
অন্যদিকে, সিলেটের অন্যতম প্রধান নদী সুরমার পানি উপচে নগরীর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। এরই মধ্যে পানিতে ডুবে গেছে নগরীর ছড়ারপাড়, মাছিমপুর, মেন্দিবাগ, সোবহানীঘাট, উপশহরের মুখ ও চালিবন্দরের একাংশ। পানি ঢুকে পড়েছে বাসাবাড়ি, দোকানপাট ও বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেও।
অন্যদিকে, সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জের ছাতক, দোয়ারাবাজার ও বিশ্বম্ভরপুরে পানি ক্রমেই বাড়ছে। সুনামগঞ্জ জেলার গোবিন্দগঞ্জ-ছাতক সড়কে পানি ওঠায় ছাতকের সঙ্গে সারাদেশের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। জেলা শহরের সঙ্গে দোয়ারাবাজার, তাহিরপুর ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার সরাসরি সড়ক যোগাযোগ অনেকটা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।