সেমাই ছাড়া বাঙালি মুসলমানের ঈদুল ফিতর কল্পনা করা যায় না। তাই ঈদ মৌসুমে সেমাইয়ের চাহিদা থাকে তুঙ্গে। চাহিদা বাড়ার সুযোগ নেন ব্যবসায়ীরা। বাড়িয়ে দেন দাম। এবারও বেড়েছে নামিদামি ব্র্যান্ডের সেমাইয়ের দাম। পাশাপাশি বেড়েছে খোলা বাজারে বিক্রি হওয়া সেমাইয়ের দামও।
শুধু সেমাইয়ের দাম নয়, বেড়েছে সেমাই রান্নার প্রধান উপাদান চিনির দামও। কেজিপ্রতি চিনিতে বেড়েছে ১০ টাকা। এছাড়া চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে কিশমিশ ও কাজুবাদামসহ আনুষঙ্গিক অন্য পণ্যগুলোও।
মঙ্গলবার (২৬এপ্রিল) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, খোলা লম্বা সেমাই বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা থেকে ২০০ টাকা কেজিতে। যা গত বছর বিক্রি হয়েছিল ১২০ থেকে ১৮০ টাকায়। আর খোলা লাচ্ছা সেমাই বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ৩০০ টাকা কেজিতে।
মুদি দোকানগুলোতে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ২০০ থেকে ২৫০ গ্রাম ওজনের সেমাই বিক্রি করা হচ্ছে ৪০ টাকা থেকে ১০০ টাকায়। এর মধ্যে বনফুল, প্রাণ, ওয়েল ফুডের ২০০ গ্রাম লম্বা সেমাই বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা প্যাকেট। যা গত বছর বিক্রি হয়েছিল ৩৫ টাকায়। প্যাকেট প্রতি ১০ টাকা করে বাড়ানো হয়েছে সেমাইয়ের দাম। তার মানে কোনো ক্রেতা যদি এসব ব্র্যান্ডের ১ কেজি সেমাই কেনেন তাহলে তাকে ৫০ টাকা বেশি দিতে হবে।
কুলসন, কিশোয়ান, ড্যানিশ ও প্রিন্স ব্র্যান্ডের ২০০ গ্রাম লাচ্ছা সেমাই বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকায়। যা এক মাস আগেও বিক্রি হয়েছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়।
এছাড়া রাবেয়া ব্র্যান্ডের ঘিয়ে ভাজা ৪০০ গ্রামের লাচ্ছা সেমাই বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকা, আর মিঠাইয়ের ২৫০ গ্রামের লাচ্ছা সেমাই বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়।
বাজারে এখন চিনি বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা কেজি। যা দুই সপ্তাহ আগেও ছিল ৮০ টাকা। অর্থাৎ ঈদকে কেন্দ্র করে চিনির দাম বাড়ানো হয়েছে কেজিপ্রতি ১০ টাকা। এছাড়া মধ্যম মানের কিশমিশ বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকা কেজিতে। আর কাজু বাদাম বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ১ হাজার টাকা কেজিতে।
সুপার শপগুলোতে ১০০ গ্রামের কিশমিশ বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা। ২৫ গ্রামের পেস্তাবাদাম বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা। ৫০ গ্রামের কাজুবাদাম বিক্রি হচ্ছে ৭৮ টাকা। আর ১০০ গ্রামের মিক্সড ফ্রুট বিক্রি হচ্ছে ৮৫ টাকায়।
রাজধানীর সদরঘাটের রায়সাহেব বাজারের মদিনা স্টোরের মালিক মোহাম্মদ টিপু বলেন, সেমাইয়ের দাম অল্প বেড়েছে, খুব বেশি নয়। যাতায়াতসহ আনুষঙ্গিক খাতে খরচ বাড়ায় দাম বেড়েছে।
তিনি বলেন, ঈদের বাজার পুরোদমে শুরু হয়েছে। আমাদের প্রত্যাশা এবার লাভের মুখ দেখব।
রাজধানীর সেগুন বাগিচা কাঁচাবাজারের আল-আমিন জেনারেল স্টোরের মালিক আল-আমিন বলেন, লম্বা খোলা সেমাই বিক্রি করছি ১৪০ টাকা কেজিতে। গত বছর এই সেমাই বিক্রি করেছি ১২০ টাকা কেজিতে।
দাম বাড়ার কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, আমাদের বেশি দামে কিনতে হয়েছে, তাই বেশি দামে বিক্রি করছি। লকডাউনের কারণে গত দুই ঈদে বিক্রি হয়নি, এবার গত দুই-তিন দিন ধরে বিক্রি শুরু হয়েছে। বিক্রি বাড়ছে, আশা করি আগামী সপ্তাহে বিক্রি আরও বেশি হবে।
কারওয়ান বাজারে আসা আনিছুজ্জামান অনিক বলেন, গরম মসলা কিনেছি। এখন সেমাই কিনতে আসলাম। এখানেও দেখি দাম বেশি। করোনার কারণে গত দুই বছর মেহমান কম এসেছেন। এবার মেহমান আসবে, তাই বেশি করে সেমাই কিনছি।