খালেদা জিয়া এবং তার ছেলে তারেক জিয়া ছাড়া বিএনপির স্থায়ী কমিটির সব সদস্যই অস্থায়ী বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
শনিবার (৪ মার্চ) সন্ধ্যায় সদ্য প্রয়াত চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও মোসলেম উদ্দিন আহমদ এমপির শোক সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলে অস্তিত্ব সংকটে পড়বে বিএনপি। তবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মতো বিএনপির শত শত উকিল আব্দুস সাত্তার তৈরি হয়ে আছে নির্বাচনে আসার জন্য। বিষয়টিও মাথায় রাখার জন্য গয়েশ্বর বাবুসহ বিএনপি নেতাদের অনুরোধ জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, কাগজে দেখলাম বিএনপির স্থায়ী কমিটির অস্থায়ী সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন- আগামী নির্বাচনে নাকি বিএনপি না আসলে আওয়ামী লীগ অস্তিত্ব সংকটে পড়বে। ২০১৪ সালে বিএনপি নির্বাচনে আসে নাই, আওয়ামী লীগ অস্তিত্ব সংকটে পড়ে নাই। উল্টো বিএনপিই অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। ২০১৮ সালে বিএনপি নির্বাচনী ট্রেনের পা দানিতে চড়ে নির্বাচনে গিয়েছিল এবং মাত্র ছয়টি সিট পেয়েছিল। আওয়ামী লীগের কোনো অসুবিধা হয় নাই, বরং বিএনপিই অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে।
মোসলেম উদ্দিন আহমদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, মোসলেম উদ্দিন আহমেদ একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। যুদ্ধকালীন আমাদের প্রয়াত আরেক নেতা এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর সঙ্গে তিনি পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তারপর দুজনেই পাগলের অভিনয় করে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাত থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন। মুক্তির পর আবার মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলেন। তিনি রাজপথ থেকে গড়ে ওঠা নেতা যিনি অসময়ে আমাদেরকে ছেড়ে চলে গেছেন। তিনি দীর্ঘ দুবছর ক্যানসার আক্রান্ত ছিলেন। অথচ তিনি না বলা পর্যন্ত তার কর্মতৎপরতা দেখে কেউ কখনো ভাবতে পারেননি তিনি ক্যানসার আক্রান্ত।
তিনি বলেন, বর্তমানে অর্থ দিয়ে রাজনীতি কেনার অপচেষ্টা হয় এবং পদ-পদবি নিয়ে এসে নেতা হওয়ার অপচেষ্টা করা হয়। মোসলেম উদ্দিন আহমেদ তা ছিলেন না। তিনি পদ-পদবী নিয়ে রাজনৈতিক নেতা হন নাই। কর্মী থেকে রাজনীতির নেতা হয়েছেন। আমাদের দলের জেলা পর্যায়ে এ ধরনের নেতারাই আছেন এবং তারা আমাদের দলের জন্য সম্পদ। তারাই এ দলটাকে ধরে রেখেছেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, মোসলেম উদ্দিন আহমদের জীবন থেকে আমাদের অনেক কিছু শেখার আছে। কারণ তিনি কর্মী থেকে নেতা হয়েছেন। কর্মীদের সঙ্গে কীভাবে মিশতে হয় এবং একাকার হয়ে যেতে হয় সেটা তিনি জানতেন। তার জীবন থেকে বর্তমানে রাজনৈতিক কর্মীদের অনেক কিছু শেখার আছে।
চট্টগ্রাম নগরীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন হলে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ যৌথভাবে এ শোক সভার আয়োজন করেন। মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং দক্ষিণ জেলার সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় শোক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপি। প্রধান আলোচক ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি।
শোক সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, হুইপ শামসুল হক চৌধুরী এমপি, আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক ওয়াসিকা আয়েশা খান এমপি, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম, দক্ষিণ জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম প্রমুখ।